প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২, ০৮:২২ এএম
রিফাত ইসলাম, বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা হবে বিশ্বমানের। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে ছাত্র-ছাত্রীরা ক্ষমতা অর্জন করবে আন্তর্জাতিক শিক্ষাশৈলির সঙ্গে তাল মেলানোর। শিক্ষার্থীরা শিখবে নৈতিকতা, মহানুভবতা, মননশীলতা। তবে পূর্ণ পরিসরে সেই সুযোগ পাচ্ছে না জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে নামাঙ্কিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় একজন ছাত্রকে শুদ্ধ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জায়গা। বিশ্বমানের পড়ালেখার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা শিখবে বৈশ্বিক জ্ঞান। মেধা ও মননশীলতায় একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হয়ে উঠবে বিশ্বমানের। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বকে দেখতে পাবে তার পারিপার্শ্বিক পরিবেশের মাধ্যমে। উচ্চশিক্ষিত শিক্ষক, ন্যায়-নীতিবান প্রশাসন এবং বিভিন্ন আঞ্চলিক শিক্ষার্থীদের থেকে শিখবে বিবিধ জ্ঞান।
তবে এইসব সুবিধায় ভাটা পড়ে আছে বশেমুরবিপ্রবিতে। ক্যাম্পাসে নেই ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র। যেখানে অবাধ চলাচলের মাধ্যমে শিক্ষকদের থেকে জ্ঞান আহরণের সুযোগ থাকবে ছাত্র-ছাত্রীদের। সেই সঙ্গে বশেমুরবিপ্রবির হলগুলোতে নেই যথাযথ ব্যবস্থা। নেই উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ, পত্রিকা পড়ার রুম, ইনডোর খেলার রুম। বিনোদনের জন্যও নেই কোনো আলাদা টিভি রুমের ব্যবস্থা। যেখানে খাওয়াদাওয়া করা হয় শিক্ষার্থীদের সেখানেই দাড়িয়ে পত্রিকা পড়তে হয়। আবার সেখানে উচ্চশব্দে চলে টেলিভিশন। টেলিভিশনের উচ্চশব্দের সঙ্গে আছে খেলায় চার, ছয়ের আনন্দে চিৎকার ও হাততালি। কেউ আবার এক কর্নারে ক্যারাম খেলেছ আর সাফল্যের চিৎকার করছে। এসব সহ্য করেই দাড়িয়ে পড়তে হবে পত্রিকা। ওদিকে ভাতের থালা হাতে নিয়ে জায়গার অভাবে দাড়িয়ে দাড়িয়ে খাচ্ছে কয়েকজন। এই হলো বশেমুরবিপ্রবির হলগুলোর নিত্যদিনের চিত্র।
হলের অসুবিধার কথা উল্লেখ করে শেখ রাসেল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী শামসুর রাহমান পাভেল বলেন, ‘আমাদের হলগুলোর পরিবেশ মানানসই। তবে সমসাময়িক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাদের সুযোগ সুবিধা কম। শুধু হল সুবিধা নয় অবকাঠামোগত দিক থেকেও অনেক ক্যাম্পাসের চেয়ে আমরা পিছিয়ে। যেহেতু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি সেহেতু অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সুযোগ সুবিধা পাবো এইটুকু আশা প্রসাশন থেকে করতেই পারি আমরা।’
বঙ্গমাতা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সাদিয়া জাহান বলেন, ‘হলের অবস্থা তো এই সম্প্রতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কিছুদিন আগেও আমরা বেড শেয়ার করে থাকতাম। আর হলে বড় রিডিং রুম দরকার যাতে বেশি শিক্ষার্থী একসঙ্গে পড়তে পারে। সেই সঙ্গে টিভিরুম আর পত্রিকা পড়ার রুম অবশ্যই আলাদা হাওয়া জরুরি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শেখ রাসেল হলের প্রভোস্ট এমদাদ হোসেন বলেন, ‘অবশ্যই শিক্ষার্থীরা এসব সুবিধার দাবিদার। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি, ক্যাম্পাসের জায়গার পরিমান কম। আবার হলের গঠনগত দিক থেকেও কমতি আছে। তাই এসব সুবিধা থেকে বর্তমানে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত। তবে এসব সুবিধা তারা অবশ্যই পাবে সেটা অতি শীঘ্রই হওয়া জরুরি।’
তিনি আরও বলেন, ‘শেখ রসেল হলে এসব সুবিধা খুব শিগগির আসছে। আমাদের কনস্ট্রাকশনের কাজ শেষ হচ্ছে দ্রুত। সেখানে আমরা একটি গেস্টরুম, আলাদা বড় ইনডোর গেমস রুম এবং আলাদা টিভিরুমের ব্যবস্থা করতে পারব। এ ছাড়া বড় একটি রিডিংরুম এবং বর্তমানের থেকে বড় প্রেয়ার রুমের ব্যবস্থা করার চিন্তা আছে আমাদের।’
শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনের তুলনায় নগন্য সুবিধা দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষার্থী উপদেষ্টা ড. শরাফত আলী জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে হলের সকল সুবিধা পাওয়া তাদের অধিকার। তবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় নতুন, পরিসর কম, অবকাঠামো কম। তাই কিছু সুবিধা থেকে আমাদের শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত। তবে প্রশাসনের প্রচেষ্টায় আশা করি যথা শিগগির বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সুবিধা আমাদের শিক্ষার্থীরা ভোগ করতে পারবে।’