
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২, ০১:৫৮ এএম
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
(চবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়
পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাশে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। পরবর্তীতে তা শাহজালাল ও
শাহ আমানত হলে ছড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষে জড়ানো গ্রুপ দুটি
হলো—শাখা ছাত্রলীগের
সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের অনুসারী সিএফসি ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপুর
অনুসারী সিক্সটি নাইন।
বিশ্ববিদ্যালয় স্বাস্থ্য
কেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, ‘আহত অবস্থায়
চিকিৎসা নিতে আমাদের এখানে ২০ জনের মতো শিক্ষার্থী এসেছে। এদের মধ্যে ১০ জনের
মাথায় পাথরের আঘাত লেগেছে। আমরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছি। এ ছাড়া বাকি ১০ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পাঠিয়ে
দিয়েছি।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা
ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়,
সোমবার শহীদ
মিনারের পাশে সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মী মির্জা সফল প্রধানের সঙ্গে সিএফসি
গ্রুপের কর্মী মেহেদি হাসানের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তারা মারামারিতে লিপ্ত
হয়। এতে মির্জা সফল প্রধান গুরুতর জখম হন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শাহ আমানত হলে সিএফসি
ও শাহজালাল হলে সিক্সটি নাইনের কর্মীরা অবস্থান নিয়ে পরস্পরের বিরুদ্ধে ইটপাটকেল
নিক্ষেপ করতে থাকে। পরবর্তীতে প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি
কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে।
এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর সাড়ে
চারটার দিকে শাহ আমানত হল থেকে ভাত খেতে যায় সিএফসি গ্রুপের সদস্য ও শাখা
ছাত্রলীগের উপবিজ্ঞান সম্পাদক শেখ রাসেল। এ সময় তাঁর ওপর আক্রমণ করে সিক্সটি
নাইনের কর্মীরা। এতে রাসেল শেখও গুরুতর জখম হয়। এই খবর জানাজানি হলে দুই গ্রুপ
আবারও মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে আধা ঘণ্টা ধরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরবর্তীতে পুলিশ
ও প্রক্টরিয়াল বডি পুনরায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় এই
প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বর্তমানে ক্যাম্পাসে
অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, ‘মির্জা সফল প্রধান নামের এক ছাত্রলীগ কর্মীর
ওপর ১০-১৫ জনের একটি দল অতর্কিত হামলা করে গুরুতর আহত করে। এর প্রেক্ষিতে পরবর্তী
ঘটনাগুলো ঘটেছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে দোষীদের বিরুদ্ধে
ব্যবস্থা নিতে বলেছি। পাশাপাশি আমরা নিজেরাও তথ্য উপাত্ত নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে
সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।’
শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি
রেজাউল হক রুবেল বলেন, ‘সাংগঠনিক কাজে
আমি ও সাধারণ সম্পাদক ঢাকায় অবস্থান করছি। যারা যারা মারামারি করেছে আমরা তাদের
বিরুদ্ধে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেব।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের
প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, ‘দুপুরে আমরা বলেছিলাম অপরাধীর বিরুদ্ধে
ব্যবস্থা নেব। কিন্তু বিকেলে সিক্সটিনাইন গ্রুপ সিএফসি গ্রুপের একজনকে হোটেলের
ভেতর মারধর করছে। এরপরই দুই গ্রুপের মধ্যে ঢিল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। পরে
পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রক্টোরিয়াল বডি উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক
করেছে। দুই গ্রুপের কর্মীদের স্ব-স্ব হলে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন পরিস্থিতি
নিয়ন্ত্রণে আছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
জেডআই/