মুনওয়ার আলম নির্ঝর
শাবিপ্রবি থেকে: অনশনস্থলের পাশে পড়ে আছে কয়েক জোড়া জুতা। হয়তো জুতার মালিক অনশন করছেন অথবা অনশনরত অবস্থায় তাকে নিতে হয়েছে হাসপাতালে। সেখানে জীবন-মরণ লড়াই করছেন। জুতাগুলো শেষ পর্যন্ত তার মালিকের পায়ে আবার উঠতে পারবে কি-না সেটা তা এক প্রকার অনিশ্চিত। ঠিক যেমন অনিশ্চিত পথে হাঁটছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনশন আন্দোলন!
শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের অনশনের ৯৩ ঘণ্টা (দুপুর ১২টা) পার হয়েছে। ১৬ জনের পর নতুন করে আর কাউকে হাসপাতালে নিতে হয়নি। তবে সময় যত গড়াচ্ছে তত দুর্বল হয়ে পড়ছে অনশনরত শিক্ষার্থীরা। ফলে যে কোনো মুহূর্তে যে কাউকে আবার হাসপাতালে নেওয়া লাগতে পারে।
গত সন্ধ্যায় গণ-অনশনের ঘোষণা দেয়ার পর নতুন করে চার জন গণ-অনশনে যোগ দিয়েছেন। অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে আবার ফিরে আসছেন অনশনস্থলে।
শনিবার দিবাগত রাতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী দিপু মনির প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা ভার্চুয়াল বৈঠক হয়। তবে তাতে চলমান সংকট নিয়ে তেমন কোনো সমাধান আসেনি।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তাদের আন্দোলন ও অনশন চলবে। শিক্ষামন্ত্রী আন্দোলনকারীদের দাবির কথা লিখিতভাবে জমা দেয়ার পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে মন্ত্রী শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙার অনুরোধ জানান।
আজ পুনরায় শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দলটির বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। প্রতিনিধি দলটি মন্ত্রীকে জানিয়েছেন, তারা অন্য আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলাপ করে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মন্ত্রীকে অবহিত করবেন।
গত ১৬ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের নির্বিচার লাঠিচার্জ আর সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ার পরে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাস। গত বুধবার দুপুর পৌঁনে ৩টা থেকে ২৪ জন শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে বসেন। এর মধ্যে একজনের বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি অনশন শুরুর পরের দিন বাড়ি চলে যান। এখন পর্যন্ত ২৩ অনশনকারীর ১৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বাকি ৭ শিক্ষার্থী উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন।
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন