
প্রকাশিত: এপ্রিল ২২, ২০২৫, ১১:০৩ পিএম
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় গুরুতর আহত বাদশা মিয়া (৫৫) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মাহমুদুল ইসলাম প্রামাণিকের নির্দেশে বাদশা মিয়াকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় দ্রুত বিচার দাবি করেছেন তারা।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার ছাপড়হাটি ইউনিয়নের মন্ডলহাট এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন নিহতের স্বজন, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও এলাকাবাসী।
এদিন ভোরে বাদশা মিয়ার মৃত্যু হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়। তিনি পশ্চিম ছাপড়হাটি গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে।
নিহতের স্বজনদের দাবি, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মাহমুদুল ইসলাম প্রামাণিকের নির্দেশে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক গোলাম আজম সরকার, ছাপড়হাটি ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক এফ আই জাহাঙ্গীর মন্ডল এবং যুবদল নেতা আব্দুর রহমানসহ একদল সন্ত্রাসী বাদশা মিয়াকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে আহত করেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন নিহতের স্ত্রী দোয়েল বেগম, ভাইয়ের স্ত্রী লিপি বেগম, আজাদী বেগম, ধুবনী কঞ্চিবাড়ী ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও ছাপড়হাটি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মোকছেদুল আলম, ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব মোখলেছুর রহমান মুকুল, নিহতের ভাই লাকি মিয়া, স্থানীয় যুবক মাসুদ রানা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বাদশা মিয়াকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়, যা ন্যাক্কারজনক ও অমানবিক। তারা বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে যারা ছিলেন, তাদের দ্রুত চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, সন্ত্রাস ও সহিংসতার মাধ্যমে যারা সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে, তাদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তারা দাবি করেন, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মাহমুদুল ইসলাম প্রামাণিক, গোলাম আজম, জাহাঙ্গীর মন্ডল, আব্দুর রহমানসহ সকল অপরাধীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক, যাতে ভবিষ্যতে কেউ আর এমন জঘন্য অপরাধ করার সাহস না পায়।
মানববন্ধনে বক্তারা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, কোনো রাজনৈতিক প্রভাব কিংবা দলীয় বিবেচনায় যেন অপরাধীরা রক্ষা না পায়। অন্যথায় সাধারণ মানুষের আইনের প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে যাবে, যা সমাজের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠবে।
উল্লেখ্য, গত ১২ এপ্রিল রাতে ছাপড়হাটি ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা শফিকুল ইসলাম মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় বাজারের ব্যবসায়ী বাবুর ওষুধের দোকানের সামনে রাখা একটি বেঞ্চে ধাক্কা লাগে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এ ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীরা বাবুর দোকান ভাঙচুরের চেষ্টা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন।