
প্রকাশিত: এপ্রিল ১২, ২০২৫, ০৭:১৫ পিএম
নড়াইলে আলাদা ঘটনায় দুইজনকে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে নড়াইল শহরের নতুন বাসটার্মিনাল চত্বরে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে মাইক্রোবাস চালক মোশারফ হোসেন মুসা (৪৫) নিহত হয়েছেন। মুসা সদরের দলিজিৎপুর গ্রামের শামসুর রহমান মুন্সীর ছেলে। শনিবার (১২ এপ্রিল) সকালে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মুসা শনিবার সকালে নতুন বাসটার্মিনাল চত্বরে ছুরিকাঘাতে আহত হন। স্থানীয় লোকজন ও বাস শ্রমিকরা তাকে উদ্ধার করে নড়াইল জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। কিছুক্ষণ পর তিনি মারা যান। কী কারণে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে তা তাৎক্ষণিক ভাবে জানা যায়নি। মুসা মাইক্রোবাস চালানোর পাশাপাশি নড়াইল-ঢাকা রুটের যাত্রীবাহী বাস `নড়াইল এক্সপ্রেস` পরিবহনেও কাজ করতেন। সদর থানার ওসি সাজেদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় কে বা কারা জড়িত, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এদিকে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে দুইপক্ষের সংঘর্ষে ফরিদ মোল্যা (৫৭) নিহত হয়েছেন। নিহত ফরিদ কাঞ্চনপুর গ্রামের সুরত মোল্যার ছেলে। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের নড়াইল জেলা হাসপাতাল ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ হত্যাকান্ডের পর আফতাব গ্রুপের লোকজন প্রতিপক্ষের ঘরবাড়ি ও দোকানপাট ভাঙচুর, মালামাল লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে জনি মল্লিক, মকিম, তুহিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা ইকবাল মোল্যাসহ প্রতিপক্ষের বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ সময় নারী ও শিশুদের মারধর করেছে প্রতিপক্ষরা।
এরপর শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাতে দেশি অস্ত্রসহ ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে সেনাবাহিনী। তাদের কালিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়। কালিয়া থানার ওসি রাশিদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেফতারকৃতরা হলেন-আমিরুল ইসলাম, আতিকুর রহমান, হাচিবুর রহমান, মোরসালিন, হাসেম মোল্যা, মনি মিয়া, মুজাহিদুল, সিরাজ মোল্যা, দিকু শেখ, আবু জাফর মোল্যা, শাহাদাত হোসেন, মুন্নু শেখ, শাহাজান, ইউসুফ, নয়ন মোল্যা, আব্দুল মান্নান, জমির মল্লিক, দিদার মোল্যা, মনিরুল ইসলাম ও আরবন হোসাইন। এদের বাড়ি কাঞ্চনপুর গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কালিয়ার কাঞ্চনপুর গ্রামের মিলন মোল্যা এবং আতাউর রহমান আফতাব মোল্যা পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। ইতোপূর্বে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে দুইপক্ষের মধ্যে। এসব ঘটনায় উভয়পক্ষে একাধিক মামলাও হয়েছে। ঈদের দিন থেকে গ্রামটিতে উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। এর জের ধরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত ফরিদ আফতাব মোল্যা পক্ষের সমর্থক।
এছাড়া আহতরা হলেন-করিম মুন্সি, হুসাইন শেখ, আশরাফ মোল্যা, বশির মুন্সি, করিম মুন্সি, জালাল মুন্সি, তৌহিদ মোল্যা, আলমিস শেখ, নিরব মোল্যা, হাসিব মোল্যা, কিবরিয়া, ওসমান মোল্যা, কামাল কাজী, তরিক শেখ, জাকারিয়া শেখ, দিদার শেখসহ অন্তত ৩০ জন।
কালিয়া থানার ওসি রাশিদুল ইসলাম বলেন, এলাকায় যৌথবাহিনী রয়েছে। ইতোমধ্যে দেশি অস্ত্রসহ ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।