• ঢাকা শুক্রবার
    ১৮ এপ্রিল, ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

ফরিদপুরের সালথায় দলে না ভিড়লেই নির্যাতন, মুক্তি চায় এলাকাবাসী

প্রকাশিত: এপ্রিল ৯, ২০২৫, ০৯:৩১ পিএম

ফরিদপুরের সালথায় দলে না ভিড়লেই নির্যাতন, মুক্তি চায় এলাকাবাসী

ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নে চর বাংরাইল গ্রামে হামলা ও নির্যাতনের ভয়ে অন্তত ২০ পরিবারের অনেক সদস্য পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। মানববন্ধন করে ওই সকল পরিবারের সদস্যরা, কোনো ধরনের এলাকা ভিত্তিক দলপক্ষ না করে স্বাধীনভাবে বসবাসের আকুতি জানিয়েছেন।

বুধবার দুপুরে সালথা উপজেলার চর বাংরাইল গ্রামে দুই শতাধিক নারী পুরুষের অংশগ্রহনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে ভুক্তভোগীরা দাবী করেন, সালথা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. মো. জাহিদ হাসান লাভলু‍‍`র পক্ষে মিশে গিয়ে, তার হয়ে গ্রাম্য রাজনীতিতে অংশগ্রহনের চাপ প্রয়োগ করেন তার (লাভলু) অনুসারীরা। এতে রাজি না হওয়ায় (৮ এপ্রিল) মঙ্গলবার বিকালে গৃহবধু শিল্পী বেগমকে মারধর করে। এসময় তার কোলে থাকা দুই বছরের শিশুকে ছুড়ে ফেলে দেয়া হয়। 

এর আগে গত ২৯ মার্চ একই অভিযোগ, দলে যোগ দিতে সম্মত না হওয়ায় প্রতিপক্ষের অর্ধশত মানুষ দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে অতর্কিতে হামলা চালায়। এসময় অন্তত ২০টি বাড়ী ঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা হয়। এছাড়া কয়েক দিনে অতর্কিতে হামলা চালিয়ে আরো অন্তত পাঁচজনকে আহত করা হয়। 

তারা দাবী করেন, ওই বিএনপি নেতা জনৈক যুবলীগ নেতাকে দলে ভিড়িয়ে শক্তি বৃদ্ধি করে, সাধারণ মানুষ যারা কোনো ধরনের দলপক্ষ বা রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নয়, তাদের জোর পুর্বক নিজ পক্ষে নেয়ার চেষ্টা করছেন। কেউ পক্ষে যেতে রাজি না হলেই তাকে টার্গেট করে বিপদে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। হুমকী ধামকী ছাড়াও হামলা এমনকি মামলায় জড়িয়েও হয়রানী করা হচ্ছে বলেও দাবী তাদের। তারা কোনো ধরণের দল পক্ষ না করে স্বাধীন নাগরিক হিসেবে বসবাস করার সুযোগ দাবী করেন।
এসময় তারা আরো দাবী করেন, ওই বিএনপি নেতার পক্ষের লোকজন হামলা চালিয়ে বাড়ীঘরে লুটপাট করলেও উল্টো মামলা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদেরই হয়রানি করা হচ্ছে। 

মানববন্ধনকারীরা বলেন, যে কোনো সময় আবারো হামলার শংকায় রয়েছেন তারা। 

যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করে সালথা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. মো. জাহিদ হাসান লাভলু জানান, স্থানীয় দুটি পক্ষ মারামারি করেছে, সেখানে আমার কোনো যোগসুত্র নেই। কোনো কারণ ছাড়াই আমাকে দোষারোপ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমি তো কোনো দলপক্ষই করিনা, তাই কাউকে দলে টানতেও চাইনি। তিনি আরো বলেন, আওয়ামীলীগ বা যুবলীগের কাউকে দলে ভেড়ানোর প্রশ্নই আসেনা। তিনি আরো বলেন, এলাকায় শান্তি রক্ষায় কাজ করছি। 

এ ব্যাপারে সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আতাউর রহমান জানান, স্থানীয় দুই পক্ষই হামলা -পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে, তাই উভয় পক্ষের থেকেই মামলা রুজু হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রনে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সালথা অঞ্চলে স্থাণীয় দল-পক্ষের প্রথার প্রচলন রয়েছে। প্রতিনিয়িত এসবের কুফল সম্পর্কে বুঝিয়ে মানুষকে দলপক্ষ নিয়ে কাইজ্যা বা মারামারি থেকে বিরত থাকতে অপুপ্রেরণা দেয়া হচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে এখন আর আগের মতো মারামারি হয় না। তবে চর বাংরাইল গ্রামের ঘটনায় শান্তি রক্ষায় পুলিশ কাজ করছে এবং করবে বলে জানান জানান তিনি। 

আর্কাইভ