• ঢাকা বুধবার
    ০২ এপ্রিল, ২০২৫, ১৯ চৈত্র ১৪৩১

পঞ্চগড়ে ভূয়া প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে সরকারি বরাদ্দ আত্মসাতের অভিযোগ আইনজীবীর বিরুদ্ধে

প্রকাশিত: মার্চ ১৯, ২০২৫, ০৭:৪৫ পিএম

পঞ্চগড়ে ভূয়া প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে সরকারি বরাদ্দ আত্মসাতের অভিযোগ আইনজীবীর বিরুদ্ধে

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় একটি ভুয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে সরকারি বরাদ্দ চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে তরিকুল ইসলাম নামে এক আইনজীবির বিরুদ্ধে। সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসনের কাছে বরাদ্দ গ্রহণ করে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে জেলা প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলোতে লিখিত গণঅভিযোগ দিয়ে জড়িতের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

তরিকুল ইসলামের বাড়ি তেতুঁলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের দানাগছ গ্রামে। তিনি পঞ্চগড় জেলা জজ আদালতের আইনজীবি ও আইনজীবি সমিতির সদস্য।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, তেতুঁলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের দানাগছ গ্রামে দানাগছ এবতেদায়ী মাদ্রাসা নামে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। তাসত্ত্বেও আইনজীবি তরিকুল ইসলাম ভূয়া প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে কাগজপত্র তৈরী করে জেলা প্রশাসক বরাবরে পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের তোবারকের জন্য জিআরের চাল বরাদ্দের আবেদন করেন। পরে ওই ওই প্রতিষ্ঠানের নামে জিআরের ২০০ কেজি চাল বরাদ্দ করে উপজেলা প্রশাসন। পরে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি তরিকুল ইসলাম নিজেকের সভাপতি ও দানাগছ গ্রামের মইনুল ইসলামকে সাধারণ সস্পাদক দেখিয়ে একটি কমিটি উপস্থাপন করেন। পরে তেঁতুলিয়া উপজেলা খাদ্য গুদাম থেকে বরাদ্দকৃত চাল উত্তোলন করে নিজেদের স্বার্থে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে, এঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পরে তারা বিভিন্ন দপ্তরে গণ অভিযোগ দিয়েছেন। তারা মনে করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন যদি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নেয় তাহলে ভবিষ্যতে আরও গুরুতর অভিযোগ ওঠার আশঙ্কা রয়েছে। সরকারি বরাদ্দের সঠিক ব্যবহার এবং ভুয়া প্রতিষ্ঠান প্রতিরোধে প্রশাসনের সুষ্ঠু কার্যক্রম নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে এলাকাবাসী। সরকারের নীতি বাস্তবায়নে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ করতে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অব্যাহত রয়েছে।

তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে তেতুঁলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের দানাগছ এলাকার নাসির বলেন, ২০ বছর আগে ওই প্রতিষ্ঠান থাকলেও বর্তমানের তার কোন চিহ্নও নেই। মাদরাসাটিতে কোন ছাত্র ছাত্রীও নেই। পড়াশোনা তো দূরের কথা। কখনো কোন অনুষ্ঠান হয়নি। তারা নিজেরা নাম দিয়ে কমিটি করে চাল আত্মসাৎ করেছে। আমরা তাদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি করছি।

অভিযুক্ত আইনজীবি তরিকুল ইসলাম বলেন, এই মাদরাসাটিতে বরাদ্দ পাওয়া চাল বিক্রি করে বাচ্চাদের তাবারক হিসেবে খাওয়ানো হয়েছে। বাকী টাকা মাদরাসার ফান্ডে জমা করা হয়েছে। মাদরাসার ছাত্রছাত্রীরা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যেমে পড়াশোনা করছে। মাদরাসার নামে জমিজমা, দলিল সবই আছে। যারা অভিযোগ করে বেড়াচ্ছে তারাই মাদরাসার চেয়ার বেঞ্চ সহ বিভিন্ন সামগ্রী আত্মসাৎ করেছে।   
                         
পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক সাবেত আলী বলেন, দানাগছ এবতেদায়ি মাদরাসার নাম দেখিয়ে সরকারি চাল বরাদ্দ নিয়েছেন আইনজীবি তরিকুল ইসলাম। পরে আত্মসাতের একটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি। তদন্তে সত্যতা মিলেছে। এঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

আর্কাইভ