
প্রকাশিত: মার্চ ১৮, ২০২৫, ০৯:১৬ পিএম
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় ১১ বছরের এক মাদ্রাসা ছাত্রকে ঘুম থেকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের (বলাৎকার) অভিযোগ উঠেছে রেজওয়ান পারভেজ (২২) নামে মাদ্রাসার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। গত রোববার (১৬ মার্চ) পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের টোকরাভাষা মোশাররফ নগর এলাকার আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া মার্কাজুল উলূম মাদরাসায় (লিল্লাহ বোডিং ও এতিমখানা) এঘটনাটি ঘটে। পরে সোমবার (১৭ মার্চ) গভীর রাতে স্থানীয়রা বিষয়টি জানতে পেরে তাকে আটক করে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশকে খবর দেয়। পরে রাতেই তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ভোরে ধর্ষণের শিকার মাদরাসা শিক্ষার্থীর বাবা বাদি হয়ে থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। পরে ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এদিকে, ওই মাদরাসা শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
গ্রেফতার মাদ্রাসার আবাসিক শিক্ষক রেজওয়ান পারভেজের বাড়ি জেলার বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের বগদুলঝুলা সর্দারপাড়া এলাকায়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ মার্চ (রবিবার) গভীর রাতে ওই শিক্ষার্থী মাদ্রাসার কক্ষে ঘুমিয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে মাদ্রাসার আবাসিক শিক্ষক রেজওয়ান পারভেজ তাকে জরুরী প্রয়োজনে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর ভয়ভীতি দেখিয়ে ও হুমকি দিয়ে জোর পূর্বক মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ (বলাৎকার) করে। পরে ওই শিক্ষার্থীকে কোরআন শরীফের উপর হাত দিয়ে কাউকে না জানাতে শপথ করান শিক্ষক। ১৭ মার্চ (সোমবার) রাতে মাদ্রাসার মসজিদের তারাবির নামাজের পর এক প্রতিবেশীকে দেখতে পেয়ে সব ঘটনা খুলে বলে মাদরাসা ছাত্রটি। পরে ঘটনাটি মাদরাসা শিক্ষার্থীর বাবাকে জানানো হয়। এদিকে, ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে। পরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা মাদ্রাসায় উপস্থিত হলে স্থানীয়রা থানা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষককে গ্রেফতার করে।
এদিকে, মাদ্রাসার আরেক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে একই সময় উপস্থিত মানুষের সামনে ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সামনে অভিযোগ তুলেছেন আরেক শিক্ষার্থী।
এবিষয়ে আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া মার্কাজুল উলূম মাদরাসার (লিল্লাহ বোডিং ও এতিমখানা) মুহতামিম নুর নবী বলেন, রাতে মাদ্রাসায় স্থানীয়দের অবস্থান দেখে জানার চেষ্টা করা হলে তারা বিষয়টি না জানিয়ে আমাদের সেখান থেকে বের করে দেয়। এক পর্যায়ে লোকজন ঘটনাটি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে অবগত না করেই অভিযোগ তুলেছে।
দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোয়েল রানা বলেন, খবর পেয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করে রাতেই থানায় নেয়া হয়। ধর্ষণের অভিযোগে মঙ্গলবার সকালে থানায় ওই শিক্ষার্থীর বাবা থানায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা দায়েরের পর আসামীকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ধর্ষণের শিকার মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর শারীরিক মেডিকেল পরীক্ষার জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। একই সাথে ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।