• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১৪ ফাল্গুন ১৪৩১
ডা.শফিকুর রহমান

আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন তার পরেই সংসদ নির্বাচন-----জামায়াতের আমীর

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৫, ০৮:১৬ পিএম

আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন তার পরেই সংসদ নির্বাচন-----জামায়াতের আমীর

নীলফামারী প্রতিনিধি

জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান বলেছেন, মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হতে হবে। তারপরেই দিতে হবে সংসদ নির্বাচন। কারন সারাদেশে পৌরসভা,সিটি কর্পোরেশন ও জেলা পরিষদগুলো ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে।পালিয়ে গেছে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা। তাই মানুষ স্থানীয় পরিষদগুলোর সেবা পাচ্ছেনা। তাই জনদুর্ভোগ লাঘবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিতে হবে।

জামায়াতের আমীর বলেন, আমাদেরকে এখনো কেউ কেউ  ভয় দেখায়। আমি তাদের ধিক্কার জানাই। আমাকে তারা ফাঁসির ভয় দেখায়।তিনি বলেন,যারা শহীদ  হওয়ার জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকে  তাদের ফাঁসির ভয় দেখিয়ে লাভ নাই। যারা পাগল তাদের ভয় দেখান।আমাদের ১১ জন নেতাকে অন্যায় ভাবে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাই আমাদের ভয় দেখাবেন না।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে  ৪টার দিকে ডোমার উপজেলা পরিষদ মাঠে উপজেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত এক বিশাল পথ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াতের আমির বলেন,  আপনাদের কথা দিচ্ছি ইসলাম প্রিয় দেশপ্রেমিক জনগণের দ্বারা যদি সরকার গঠন করা হয় তাহলে দেশে কোন অরাজকতা থাকবে না। বরং বৈষম্যহীন বাংলাদেশে যে এলাকা বঞ্চিত, সে এলাকায় সবার আগে কাজ করা হবে ইনশাআল্লাহ। আর যেসব এলাকায় বৈষম্য নেই, তারা পাবেন ন্যায্যতার হিসাব। কাউকে বঞ্চিত করা হবে না।

ছাত্রদের উদ্দেশে শফিকুর রহমান বলেন, আমি ছাত্র ভাইদের বলছি। একদিনের জন্য তোমাদের বেকারত্বের অভিশাপের বোঝা বহন করতে হবে না। পড়াশোনা শেষ করে সার্টিফিকেট ও চাকুরির কাগজ নিয়ে তোমরা বের হবা। সেই সাথে তাদের কাজের ব্যবস্থা করা হবে। নারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমাদের উন্নয়ন সমাজের উন্নয়ন। এমন একটা মানবিক বাংলাদেশ আমরা গড়তে চাই।যেখানে কোন বিভেদ থাকবেনা।
তিনি বলেন আবারো ফ্যাস্টিটরা মাথাচারা দেওয়ার চেষ্টা করলে  ৫ আগষ্টের মত আপনাদের অবস্থা হবে। তখন আমরা বিবেকের দিকে তাকিয়ে, বিবেকের দায়বদ্ধতা থেকে দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য হবো।

তিনি আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে বলেন,তারা মানুষ খুন করেছে, ইজ্জত লুন্ঠন করেছে, সম্পদ লুণ্ঠন করেছে। 
আবু সাঈদ আর মুগ্ধদের হত্যা করেছে। তাই তাদের বিচার আগে করতে হবে। শহীদরা কোন দলের নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন শহীদরা দেশের সম্পদ। অথচ কিছু দল শহীদদের তাদের কর্মী বলে দাবী করেন।
শফিকুর রহমান বলেন, আমরা বাংলাদেশকে আর গডফাদারদের দেশ দেখতে চাই না, গডমাদারদের বাংলাদেশ, মাফিয়াতন্ত্রের বাংলাদেশ দেখতে চাই না, ফ্যাসিবাদের বাংলাদেশ দেখতে চাই না।
অনেকেই বলেন চাঁদাবাজী বন্ধ হয়নি শুধু ব্যক্তির হাতবদল হয়েছে। ৫ আগষ্ট ফ্যাস্টিট পালিয়ে গেছে তাহলে চাঁদাবাজী করা করছে। যারা চাঁদা,দখল করছে তাদের গ্রেফতারের দাবী জানান তিনি।
সংখ্যালঘুদের বিষয়ে জামায়াতে আমির বলেন, কিসের সংখ্যালঘু আর কিসের সংখ্যাগুর“। এদেশে যেই জন্ম নিয়েছে, সেই এদেশের গর্বিত নাগরিক। আমরা নাগরিকদের ভাগ বাটোয়ারা কোনো ধর্ম বা দলের ভিত্তিতে করার পক্ষে নই। অতীতের পতিত স্বৈরাচারী জাতিকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে মুখোমুখি লাগিয়ে রেখেছিল। যে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারে না, সে দেশের মানুষ মাথা সোজা করে বিশ্ব দরবারে সম্মানের সাথে দাঁড়াাতে পারে না। স্বাধীনতার ৫৪ বছর গেল, আর কতদিন আমাদেরকে টুকরো টুকরো করা হবে। আমাদের স্পষ্ট ঘোষণা আমরা কোনো মেজোরিটি বা মাইনোরিটি মানি না।
তিনি বলেন,আমরা বাংলাদেশকে একটি মানবিক বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই তাই সকলের সহযোগীতা প্রয়োজন। আনুপাতিক হারে সংসদ নির্বাচনের দাবী জানিয়ে তিনি বলেন, তাহলে বাংলাদেশের সকল দল সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে। তিনি বলেন, ১৭ বছর যেভাবে আমাদের উপর অত্যাচার করা হয়েছে সেগুলোর বিচার করতে হবে। সংস্কারের পরেই যৌক্তিক সময়ে নির্বাচনের দিতে হবে। তাই বাংলাদেশের উন্নয়নে সকল দলকে এক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান তিনি।

উপজেলা জামায়াতের আমির খন্দকার মোঃ আহমাদুল হক  মানিকের সভাপতিত্বে ও  জেলা সেক্রেটারী মাওলানা আন্তাজুল ইসলামের সঞ্চালনায়  জনসভায় জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আব্দুস সাত্তার, ও সাবেক আমীর আব্দুর রশিদ বক্তব্য রাখেন।

এর আগে উপজেলা,পৌরসভা এবং ইউনিয়ন থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে জনসভায় মিলিত হন জামায়াত, শিবির ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

দেশজুড়ে সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ