• ঢাকা বুধবার
    ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১৩ ফাল্গুন ১৪৩১

সংস্কারের জারিগান নয়, দরকার নির্বাচিত সরকার: গয়েশ্বর চন্দ্র

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৫, ১০:৪৬ পিএম

সংস্কারের জারিগান নয়, দরকার নির্বাচিত সরকার: গয়েশ্বর চন্দ্র

গাজীপুর প্রতিনিধি

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, জনগণ নির্বাচনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন। তারা ধানের শীষে ভোট দিয়ে বিএনপিকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। কাজেই আর সংস্কারের জারিগান নয়। কতকাল লাগবে সংস্কার? সারাজীবন দরকার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার- জনগণ এমনটি চায় না। জনগণ চায়, এই মুহূর্তে দরকার নির্বাচিত সরকার।

‘দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, পণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা, ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্তের অপচেষ্টা মোকাবেলাসহ বিভিন্ন জনদাবিতে’ মঙ্গলবার বিকালে গাজীপুর জেলা বিএনপির আয়োজনে নগরীর ঐতিহাসিক রাজবাড়ি মাঠের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ড. ইউনূসকে উদ্ধৃত করে বলেছেন, ছাত্ররা তাকে ক্ষমতায় বসিয়েছেন। তাই তিনি ছাত্রদের খেদমতেই ব্যস্ত রয়েছেন। দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি, আইনশৃঙ্খলার অবনতি এদিকে তার খেয়াল নেই।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের দাবি নতুন নয়, ১৭ বছর ধরে বিএনপি জাতীয় নির্বাচনের জন্য, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলন করে আসছে। এখন সব শোনা শেষ, মানুষ এখন নির্বাচন চায়।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সরকার ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা বলছে। কিন্তু এটি স্থানীয় নির্বাচন, নাকি জাতীয় নির্বাচন তা স্পষ্ট নয়।

তিনি বলেন, সংস্কারের দায়িত্ব অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নয়, সংস্কারের নামে বিরাজনীতিকরণের কুসংস্কার ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিনের আমলেও আমরা দেখেছি। কিন্তু তারাও সফল হয়নি। সংস্কারের নামে সময় নষ্ট না করে দ্রুত নির্বাচন দিয়ে জনগণের ভাষা বুঝুন। জনগণের ভাষা বুঝতে না পারলে হোঁচট খাবেন।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ছাত্র-জনতা আন্দোলনের জনতা কারা? এই জনতা বলতে আমজনতা নয়, বিএনপি ও এর অঙ্গ দলসমূহের নেতাকর্মীরা।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, একটা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন না দেখে আর আগাতে দেব না। প্রশাসনে এখন সব আওয়ামী লীগ জামায়াত হয়ে গেছে। তারা ভাবছে জামায়াত ক্ষমতায় এসে গেছে।

তিনি বলেন, আঘাত আসলে আসুক, সব আঘাত ফেরত দেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত। তারেক রহমান এখন জনগণের নেতা। একজন ৫ আগস্টে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে, একাত্তরে তার বাবাও পালিয়েছিল। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া পালায়নি। তিনি অনেক কষ্ট-নির্যাতন সহ্য করে দেশেই আছেন। তিনি আমাদের সাহস, আমাদের আদর্শ। কাজেই আমাদের ভয় নেই।

একই সমাবেশের প্রধান বক্তা বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়্যেদুল আলম বাবুল বলেন, শেখ হাসিনার প্রেতাত্মারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে চারপাশ দিয়ে ঘিরে রেখেছে। এরা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়। এদের ধরে আগে বিচার নিশ্চিত করে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন।

গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ব্যারিস্টার চৌধুরী ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর খান, কেন্দ্রীয় সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, কেন্দ্রীয় নেতা মজিবুর রহমান, ওমর ফারুক সাফিন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ রিয়াজুল হান্নান, কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি হুমায়ুন মাস্টার, কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ভিপি হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক সাইজুদ্দিন, শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আক্তারুল আলম মাস্টার, গাজীপুর সদর বিএনপির সভাপতি আবু তাহের মুসল্লি, কালিয়াকৈর পৌর বিএনপির সভাপতি দেওয়ান মোয়াজ্জেম হোসেন, শ্রীপুর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন বেপারি, জেলা যুবদলের সভাপতি আতাউর রহমান মোল্লা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাসিবুর রহমান মুন্না, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসী, জেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক মো. মিনার উদ্দিন, জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি জাফর ইকবাল জনি প্রমুখ।

এর আগে জেলা ওলামা দলের আহ্বায়ক হাফেজ মোহাম্মদ ইব্রাহীমের কুরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সমাবেশ শুরু হয়।

দেশজুড়ে সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ