
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৫, ০৬:৫৩ পিএম
কিশোরগঞ্জে কটিয়াদী উপজেলার মুমুদিয়া ইউনিয়নে ৪০০শত বছরের ঐতিহাসিক কুড়িখাই মেলা উদ্বোধন করা হয়।
হযরত শাহ্ শামসুদ্দীন আউলিয়া সুলতানুল বুখারী (রঃ) শরিফের খাদেম ও মেলা কমিটির সদস্য, শাহ নাসির উদ্দিন, আমাদের জানান যে আউলিয়াদের শিরোমনি হযরত শাহ জালাল (র:) সফর সঙ্গী হিসেবে হযরত শাহ্ শামসুদ্দীন আউলিয়া সুলতানুল বুখারী (রঃ) এদেশে ইসলাম প্রচারে এসেছিল । পরে আরো তিনজন সঙ্গী নিয়ে কটিয়াদী উপজেলার মুমুদিয়া ইউনিয়নের খুড়িখাই গ্রামে থাবু করে ইসলাম প্রচার করে। তার মৃত্যুর পরে মাজার কে ঘিরে সেখানে মেলার প্রবর্তন হয়।
তিনি আমাদের বলেন আগেকার দিনে একসময় গ্রামে গঞ্জে সারাবছরই ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন ধরণের গ্রামীন মেলা হতো। যুগের সাথে আমাদের মন মানসিকতা তাল মিলাতে গিয়ে এই গ্রামীন মেলা গুলো এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ধারক এইরকম গ্রামীন মেলা এখন খুব কমই দেখা যায়। তবে কিছু কিছু জায়গায় এখনো অনেক ঐতিহ্যবাহী মেলার আয়োজন বহু পুরনো বছরের রেওয়াজ ধরে চলছে প্রতিবছরই।
তেমনই একটি মেলা হলো কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদি উপজেলার কুড়িখাই মেলা । ইতিহাস অনুযায়ী এই মেলা প্রায় ৪০০ বছর ধরে প্রতিবছরই অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বারো আউলিয়াদের একজন হযরত শাহ শামসুদ্দিন আওলিয়া ৪০০ বছরের আগে ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দ্যেশে কটিয়াদির কুড়িখাই এলাকায় আসেন, তখন থেকেই তাঁর মাজারের ওরসকে কেন্দ্র করে এই মেলার আয়োজন হয়।
প্রতি বছর মাঘ মাসের শেষ সোমবার থেকে শুরু হয় এই মেলা, চলে ৭দিন। এখানকার স্থানীয় মানুষজন সারা বছর ধরে অপেক্ষা করে এই সময়ের। আশেপাশের সকল মানুষের ভিড়ে পুরো সময় জুড়েই এই মেলা জমজমাট হয়ে থাকে। সারাদেশ থেকে ফকির দরবেশ সহ সমাগম হয় লাখো মানুষের।
গ্রামীন মেলার যে সব ঐতিহ্য থাকে তার সবকিছুই থাকে এই মেলায়। মেলায় পাওয়া যায় না এমন কিছু নেই। সেই সাথে চলে ওরস ও সারা দেশ থেকে আসা সাধুদের নানা কীর্তি।
তবে এই মেলার অন্যতম আকর্ষণ হলো মাছের মেলা। মেলা প্রঙ্গনের একপাশে বসে বিশাল বিশাল ও নানা বাহারী মাছের বাজার। রীতি অনুয়ায়ী এলাকার মেয়েদের জামাইদের দাওয়াত দেওয়া হয়। জামাইদের মধ্যে মাছ কেনা নিয়ে চলে প্রতিযোগিতা, কে কত বড় মাছ কিনে শ্বশুর বাড়ি গেলো এই নিয়ে চলে মাতামাতি। আর সেই মাছ দিয়েই হয় শ্বশুরবাড়িতে জামাইদের আপ্যায়ন। মেলার পুরো সময় ধরেই এলাকায় বিরাজ করে আনন্দঘন পরিবেশ।