প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৫, ০২:১৯ পিএম
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়েও দেশের মধ্যে উসকানি দিয়ে উত্তপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়। তিনি বলেন, এসব মুক্তিপাগল মানুষ সহ্য করবে না।
আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় নারায়ণগঞ্জের ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামের জেলা ও মহানগর জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আয়োজিত জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় গেলে নারীরা ঘরে-বাইরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও মর্যাদায় কাজ করতে পারবে।’
জামায়াতের আমির বলেন, শেখ হাসিনার উসকানির ফলে বর্তমানে দেশে যে পরিস্থিতি সৃস্টি হবে এর দায়ও তাঁর।
শফিকুর রহমান বলেন, ‘শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা দেশের যত টাকা চুরি-ডাকাতি-লুট করে বিদেশে পাচার করেছে তা অন্তর্বর্তী সরকারকে ফিরিয়ে আনতে হবে। সেই টাকা জনগণের উন্নয়ন কাজে ব্যয় করতে হবে।’
নারায়ণগঞ্জ আগে সন্ত্রাসীদের রাজধানী ছিল উল্লেখ করে জামায়াতের আমির বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের মানুষ এতদিন অনেক কষ্টে ছিল। এই নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাসের রাজধানী বানিয়ে রাখা হয়েছিল। আমাদের তৎকালীন জামায়াতের আমির ছিলেন গোলাম আজম। তাঁর বিরুদ্ধে এই শহরের এক গডফাদার নারায়ণগঞ্জের সড়কে ৭২ ফুট লম্বা ব্যানার টানিয়েছিল। তাতে লিখা ছিল, নারায়ণগঞ্জে গোলাম আজমের প্রবেশ নিষিদ্ধ। ডিসি, এসপির উপস্থিতিতে গডফাদার শামীম ওসমান বলেছিলেন, আমার বিরুদ্ধে খুনের আগাম মামলা করে রাখেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সরকারের জুলুমের শিকার হয়ে গোলাম আজম সাহেব মারা যান।’
‘গডফাদারের সুযোগ হয় নাই? আজ তিনি কোথায়? নারায়ণগঞ্জে নেই? এতো অহংকার ভালো না। দাম্ভিকতা ভালো না। সন্ত্রাসকে কখনো প্রশ্রয় দিতে হয় না। তাহলে দুনিয়াতেই এর করুণ পরিণতি ভোগ করতে হয়। এ ছাড়া আখিরাতেও তাকে শূলে চড়তে হবে। যেটা হবে আগুনের মহাকুণ্ড। তাই বলি, তওবা করুন। মানুষ মতো মানুষ হন।’
শফিকুর রহমান বলেন, ‘গত ৫৪ বছর এই জাতিকে বিভক্ত করে রাখা হয়েছিল। আর সুকৌশলে এই বিভক্তি সৃষ্টি করেছিল আওয়ামী লীগ। তারা বিভক্তি শুরু করেন পাহাড়িদের নিয়ে। আওয়ামী লীগ ঘোষণা দিয়ে বলে, আমরা সবাই বাঙ্গালী। কিন্তু এটা নিয়ে পাহাড়িরা প্রতিবাদ করে। তখন থেকে এই যে বিভক্তি শুরু হয়েছে তা এখনও চলমান। এখনও ওইখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয় নাই।’
দেশের একজন নাগরিকের সব অধিকার পাওয়ার অধিকার আছে জানিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের এই সমাজ হবে বৈষম্যহীন—এটাই মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা। আওয়ামী লীগ দেশের সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়ে গিয়েছে। প্রশাসন, বিচার ব্যবস্থাকে আওয়ামী লীগ পুরোদমে ধ্বংস করে দিয়েছে।’
নারায়ণগঞ্জ মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর আমির মুহাম্মদ আব্দুল জব্বারের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, ঢাকা অঞ্চল দক্ষিণের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসাইন প্রমুখ।
