প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৫, ০৮:৪১ পিএম
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার ৪০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। ফলে প্রশাসনিক কার্যক্রম ও শিক্ষার গুণগত মান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এ অবস্থায় সহকারী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করলেও কার্যক্রম চালাতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, কটিয়াদীতে ১টি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নের মধ্যে মোট ১১৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৪০টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। ফলে সিনিয়র সহকারী শিক্ষকদের মাধ্যমে প্রশাসনিক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এছাড়া, ২৮টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক চলতি দায়িত্বে রয়েছেন এবং ৪১টি সহকারী শিক্ষকের পদও শূন্য রয়েছে। এতে শিক্ষার মান ও প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
একাধিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা জানান, প্রধান শিক্ষক না থাকায় ভারপ্রাপ্তরা পাঠদান থেকে শুরু করে প্রশাসনিক কার্যক্রম সামলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। একজন সহকারী শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ায় অনেক ক্ষেত্রেই বিদ্যালয়ের অন্যান্য সহকারী শিক্ষকদের পরিচালনা করতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। ফলে শিক্ষার পরিবেশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের ওপর অতিরিক্ত দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়ায় তিনি যথাযথভাবে শিক্ষার্থীদের দেখভাল করতে পারছেন না। প্রশাসনিক কাজের চাপে তার বিদ্যালয়ে উপস্থিতিও কমে যাচ্ছে, ফলে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। তারা দ্রুত প্রধান শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানান।
মসূয়া ইউনিয়নের ফুলদি কড়েহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনোয়ারা খাতুন বলেন, “প্রধান শিক্ষক অবসরে যাওয়ায় আমাদের বাড়তি দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে, কিন্তু কোনো অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা পাই না। অফিসের কাজের কারণে ক্লাস নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।”
চরপক্ষিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিন জানান, “২০১৯ সালের অক্টোবর থেকে চলতি দায়িত্ব পালন করছি, কিন্তু এখনও বেতন ১১তম গ্রেডেই রয়ে গেছে। শুধুমাত্র ১৫০০ টাকা সম্মানী পাই। পাঁচ বছর পার হলেও বেতনগ্রেড উন্নতি হয়নি।”
কটিয়াদী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আফজাল হোসেন জানান, “৪০টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদ পূরণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। পদোন্নতি অথবা সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে এই সংকট সমাধান হবে। পাশাপাশি ৪১টি সহকারী শিক্ষকের শূন্যপদ পূরণের জন্যও তালিকা পাঠানো হয়েছে। সরকার নতুন নিয়োগ দিলেই এই সংকট কেটে যাবে।