প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৭, ২০২৫, ০৪:০৯ পিএম
বিশ্ব ঐতিহ্য ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনে জীবনাচারণ জানতে আরও একটি কুমিরের পিঠে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো হয়েছে। রোববার (২৬ জানুয়ারি) বিকেলে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের চরাপুটিয়া খালে কুমিরটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
বন বিভাগ বলছে, কুমিরের জীবনাচরণ ও গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে জানতে পিঠে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে অবমুক্ত করার এ উদ্যোগ। এর মাধ্যমে সুন্দরবনের নদীতে কুমিরের চলাচল ও অবমুক্ত করা কুমিরের বেঁচে থাকা সম্পর্কে জানা যাবে।
এর আগে গত বছরের মার্চে বন বিভাগ ও প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক জোট (আইইউসিএনের ) সহযোগিতায় সুন্দরবনের নদী-খালে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে চারটি কুমির অবমুক্ত করা হয়।
অবমুক্ত করা কুমিরটির জন্ম ও বেড়ে ওঠা বন বিভাগের করমজল বন্য প্রাণী প্রজননকেন্দ্রে। এর বয়স ১২ বছর। প্রায় ২০ কেজি ওজনের স্ত্রী কুমিরটি সুন্দরবনে ছাড়ার পর থেকেই তার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।
কুমিরটি অবমুক্তের সময় উপস্থিত করমজল বন্য প্রাণী প্রজননকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন, গবেষণার মাধ্যমে কুমির কোথায় যাচ্ছে, কুমিরের জীবনাচারণ ও খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে জানা যাবে। বর্তমানে বাংলাদেশে কেবল সুন্দরবন এলাকাতেই প্রাকৃতিক পরিবেশে লোনাপানির কুমির দেখা যায়। পরিবেশে লোনাপানির কুমিরের এই প্রজাতির প্রজনন খুব একটা হচ্ছে না। প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইইউসিএনের তালিকায় লোনাপানির কুমিরকে বাংলাদেশে বিপন্ন প্রজাতি হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এই কুমিরের প্রজনন বৃদ্ধি ও লালন-পালনের জন্য ২০০০ সালে সুন্দরবনের করমজলে বন বিভাগের উদ্যোগে কুমির প্রজননকেন্দ্র স্থাপন করা হয়। অবমুক্ত করা কুমিরটি এ কেন্দ্রেই লালন-পালন করা।
এর আগে ২০২৪ সালের ১৩ থেকে ১৬ মার্চ সুন্দরবনে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে ছাড়া চারটি কুমিরের মধ্যে দুটি ছিল পুরুষ ও দুটি স্ত্রী।
বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ওই কুমিরগুলো অবমুক্তের এক মাসের কাছাকাছি সময়ে একটি কুমির প্রায় ১৫০ কিলোমিটার এলাকা ঘুরেছিল এবং সুন্দরবন এলাকার বাইরে চলে যায়। প্রায় এক মাস পর ১২ এপ্রিল রাতে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার কলাতলা ইউনিয়নের দক্ষিণ শৈলদাহ গ্রামের পুকুর থেকে উদ্ধার করে আবার সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হয়।
অবমুক্ত করা চারটি কুমিরই এখনো সুন্দরবনের ভেতরে আছে বলে জানিয়েছেন বন কর্মকর্তা আজাদ কবির।
এর আগে বিভিন্ন সময়ে বাটাগুর বাসকা নামের বিলুপ্ত প্রজাতির কচ্ছপের পিঠে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার যুক্ত করে সুন্দরবনের বাংলাদেশ ও ভারত অংশে অবমুক্ত করা হয়।