প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০২৫, ০৭:০৬ পিএম
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় বিএনপির নবগঠিত কমিটি বাতিলের দাবিতে শনিবার (২০ জানুয়ারি ২৫) সকাল থেকে স্থানীয় নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাব চত্বরে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপজেলার শত শত বিএনপি নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করে। এ সময় নেতাকর্মীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন, যা শ্যামনগর উপজেলার প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিলে তারা “অযোগ্য কমিটি মানি না,” “ত্যাগীদের বঞ্চনা চলবে না” ইত্যাদি স্লোগান দেন।
প্রতিবাদ সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, নবগঠিত কমিটিতে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের বাদ দেয়া হয়েছে।
গত রোববার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির আহবায়ক সৈয়দ ইফতেখার আলী ও সদস্য সচিব আব্দুল আলিম স্বাক্ষরিত জি এম সোলায়মান কবির কে আহবায়ক ও গোলাম আলমগীর কে সদস্য সচিব করে ৪৩ সদস্য বিশিষ্ট শ্যামনগর উপজেলা বিএন পির কমিটি ঘোষনা করা হয়। তার কয়েক ঘন্টা পর সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব স্বাক্ষরিত সংশোধিত লিখে আলহাজ্ব মাষ্টার আব্দুল ওয়াহেদ কে আহবায়ক ও আলহাজ্ব সোলাইমান কবীর কে সদস্য সচিব করে ৪৩ সদস্য বিশিষ্ট শ্যামনগর উপজেলা বিএনপির কমিটি ঘোষনা করা হয়।পাশাপাশি শেখ লিয়াকত আলীকে আহবায়ক ও সামছুজ্জোহা টুটুল কে সদস্য সচিব করে ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি প্রদান করা হয়। এদিকে রাতে এ সকল কমিটি ফেসবুকে পাওয়ার পর থেকে বাদ পড়া ত্যাগী নেতারা ওই মুহুর্তে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে দ্রুত বাতানো কমিটি বাতিলের দাবী অব্যাহত রাখে।
এদিকে এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে শ্যামনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক ছাত্রনেতা জহুরুল হক আপ্পু বলেন,আমরা ১৭ বছর ধরে আওয়ামী লীগের শাসনামলে জেল, জুলুম, হয়রানি ও নির্যাতন সহ্য করেছি। তখন আমরা দলের পাশে দাঁড়িয়ে আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ছিলাম। অথচ এই কমিটিতে এমন অনেককেই রাখা হয়েছে, যারা গত ১৭ বছরে আমাদের পাশে ছিল না এবং আন্দোলনে তাদের কোনো ভূমিকা ছিল না।
তিনি আরও বলেন, যারা দলের সংকটের সময় একবারের জন্যও মাঠে আসেনি, তাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ পদ দিয়ে আমাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। আমরা এই কমিটি মানি না। এটি বাতিল করতে হবে।
উপজেলা বিএনপির অন্যতমনেতা এডভোকেট আশিক ই এলাহী মুন্না বলেন,আমরা এই কমিটি বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। দলীয় হাইকমান্ডের কাছে স্মারকলিপি পেশ করা হবে। আমাদের দাবি না মানা হলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
পদ্মপুকুর ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপি`র সভাপতি মোঃ আমজাদুল ইসলাম বলেন, দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করার কথা ছিল, কিন্তু তা করা হয়নি। আমরা এই কমিটি বাতিলের দাবি জানাই।
উপজেলা বিএনপির উন্নততম নেতা গাজী শাহ আলম বলেন,আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বিএনপির আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে আমরা মামলা-হামলার শিকার হয়েছি। আমাদের অনেক নেতাকর্মী এখনো বিভিন্ন মামলায় হাজিরা দিচ্ছে। অথচ এসব ত্যাগের কোনো মূল্যায়ন করা হয়নি। কমিটি গঠনে দুর্বৃত্তায়ন ও স্বজনপ্রীতি হয়েছে।
উল্লেখ্য, শ্যামনগর উপজেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটি সম্প্রতি ঘোষণা করা হয়। তবে এটি ঘোষণার পর থেকেই নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। ত্যাগী নেতাদের উপেক্ষা করে পছন্দের ব্যক্তিদের স্থান দেওয়ার অভিযোগে এই কমিটির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় নেতারা।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, যুবদল নেতা হাফিজ আল কল্লোল, নাজমুল হক, পৌর বিএনপি নেতা, আব্দুল হামিদ, খান আব্দুস সবুর, মো আব্দুর রশিদ কৈখালী বিএনপির সাধারন সম্পাদক সহ আরো অনেকে।