• ঢাকা সোমবার
    ০৬ জানুয়ারি, ২০২৫, ২৩ পৌষ ১৪৩১

হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করে নিরাপত্তাহীনতায় অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২৫, ০৬:৪৫ পিএম

হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করে নিরাপত্তাহীনতায় অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী

পাবনা প্রতিনিধি

কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা, বাড়ি-ঘরে হামলা-ভাংচুর, জমিদখল, পুকুরের মাছ লুটসহ নানা ঘটনায় মামলা করে বিপাকে পড়েছেন পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত এক সরকারি প্রকৌশলী। অভিযুক্তদের নানা বাধা ও হুমকিতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ভুক্তভোগী প্রকৌশলী ও তার পরিবারের সদস্যরা। ভয়ে ঘর থেকে বের হতে পারছেন তারা।

ভুক্তভোগী প্রকৌশলী আলাউদ্দিন মোল্লা আটঘরিয়ার উপজেলার চাঁদভা ইউনিয়নের বাঁচামারা গ্রামের মৃত শামসুল হক মোল্লার ছেলে এবং বিদ্যুৎ বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী। আর অভিযুক্ত চাঁদভা হাটপাড়া গ্রামের আব্দুল আউয়ালের ছেলে মিলন মোল্লা, হিরণ মোল্লা, আল-আমিন মোল্লা ও তাদের লোকজন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তরা পরস্পর আত্মীয়। দু:সম্পর্কের চাচা-ভাতিজা। ১৯৯৪ সাল থেকে মৌখিক এওয়াজ বদলের মাধ্যমে তারা পরস্পরের জমি ভোগ দখল করে আসছিলেন। কয়েক বছর আগে সেই সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন অভিযুক্তরা। গত ৫ আগস্ট পরিবর্তিত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সেই জমি আবারও দখলের চেষ্টা করেন অভিযুক্তরা। ৭ আগস্ট প্রকৌশলী আলাউদ্দিন মোল্লার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করেন তারা। এর কয়েকদিন পর আলাউদ্দিনের কাছ থেকে পুকুর লীজ গ্রহণকারীকে উচ্ছেদ করে পুকুর দখল ও মাছ লুট করেন অভিযুক্তরা।

এ বিষয়ে লীজ গ্রহণকারী মামলা করলে হুমকি-ধামকি দিয়ে তাকে দিয়ে সেই মামলা প্রত্যাহার করানো হয়। পরবর্তীতে আলাউদ্দিন নিজেই বাদি হয়ে ভাতিজা মিলন, হিরনসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে দখল, হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগে আদালতে একটি মামলা করেন। এরপর তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২০ ডিসেম্বর মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় অভিযুক্তরা আলাউদ্দিনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন। হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে আসার পর এ ঘটনায় আলাউদ্দিনের স্ত্রী বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়েরের পর থেকে আবারও হত্যার হুমকি দিয়ে আসছেন অভিযুক্তরা।

এ বিষয়ে প্রকৌশলী আলাউদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘আমার স্ত্রী কলেজে শিক্ষকতা করেন এবং একমাত্র ছেলে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াশোনা করেন। আসামিরা হুমকি দিচ্ছে যদি আমরা মামলাগুলো প্রত্যাহার না করি, তাহলে তারা আমাকে, আমার স্ত্রী ও ছেলেকে মেরে ফেলবে। তারা স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এইগুলো করছে। আমি ও আমার পরিবার এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।‍‍`

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্তদের মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত মিলন মোল্লা বলেন, ‘আমরা তাকে কোনো মারধর করিনি, কে করেছে তা আমরা জানি না। উনি আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন। যেদিন তাকে মারধর করা হয়েছে সেদিন আমি বাড়িতেও ছিলাম না। দাওয়াত খেতে বেয়াই বাড়িতে গিয়েছিলাম। তবে তার সাথে জমি নিয়ে পারিবারিক বিরোধ আছে বলে স্বীকার করেন তিনি।’

এ ব্যাপারে আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুজ্জমান সরকার বলেন, ‘আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। আদালতে দায়ের করা মামলাটির অভিযোগপত্র ইতোমধ্যেই আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আসামীরা আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। পরবর্তীতে মারধরের ঘটনায় তার স্ত্রীর একটি জিডি গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করি অভিযুক্তরা আইনে আওতায় আসবে।’

আর্কাইভ