• ঢাকা সোমবার
    ০৬ জানুয়ারি, ২০২৫, ২৩ পৌষ ১৪৩১

ঘোড়া দিয়ে অন্যের জমি চাষে চলে মমিনের সংসার

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২৫, ০৬:৪২ পিএম

ঘোড়া দিয়ে অন্যের জমি চাষে চলে মমিনের সংসার

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

বর্তমানে গরু-মহিষ দিয়ে হাল-চাষের দৃশ্যই যেখানে বিরল, সেখানে ঘোড়া দিয়ে হালের দৃশ্য কেউ হয়ত কল্পনাও করেন না।

কিন্তু এমনটাই করে চলেছেন লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ৬৬ বছর বয়সি এক বৃদ্ধ। উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের জমগ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মমিন। টাকার বিনিময়ে এক জোড়া ঘোড়া দিয়ে অন্যের জমি চাষ করে রীতিমত সংসার চালাচ্ছেন। স্ত্রী, দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে মমিনের সংসার। বসতভিটা ছাড়া কোনো জায়গা-জমি নেই।

বৃদ্ধ বলেন, “আমার নিজের কোনো জমি নেই। মানুষের জমিতে হাল-চাষ করি। বিঘা প্রতি সাড়ে চারশ থেকে পাঁচশ টাকা নিই।”

তিনি বলেন, “গরুর চেয়ে ঘোড়া বেশি হাঁটাচলা করে। সে কারণে কম সময়ে অনেক বেশি জমি চাষ করা যায়। একদিনে দুই থেকে তিন বিঘা পর্যন্ত জমিতে হাল-চাষ করা যায়। আমি গরিব মানুষ, এটা করেই সংসার চালাই।”

বাউরা এলাকার জমির মালিক ইমান আলী (৪০) বলেন, “ট্রাক্টর বা পাওয়ার টিলার ঢোকার মত রাস্তা নেই। জমি কী দিয়ে চাষ করব, এই ভেবে দুশ্চিন্তা ছিলাম। নিজেও গরু পেলে জমিতে হাল-চাষ করার মত শারীরিক অবস্থা নেই। শেষে পরিচিত একজনের কাছে জানতে পারলাম, জমগ্রামের মমিন চাচা টাকার বিনিময়ে ঘোড়া দিয়ে হাল-চাষ করেন। তাকে খবর দিয়ে নিয়ে এলাম।”

ঈমান আলী আরো বলেন, “চাষের সময় দেখতে পেলাম, ঘোড়ার শক্তি গরুর চেয়ে অনেক বেশি। ঘোড়া খুব দ্রুত হাঁটে, সে কারণে হাল-চাষও দ্রুত হয়। চাষও খুব ভালো হয়।”

পাটগ্রাম উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা হারুন মিয়ার ভাষ্য, “আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির যুগে প্রায় কৃষকই এখন উন্নতমানের যন্ত্র দিয়ে জমি চাষ করেন। এখন গরু-মহিষের হাল-চাষই চোখে পড়ে না। সেখানে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করাটা বিরল। আব্দুল মমিন জীবিকার প্রয়োজনে অন্যের জমিতে ঘোড়া দিয়ে চাষ বা মই দিচ্ছেন। তবে আমরা কৃষি বিভাগ কৃষকদের সবসময় আধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করে চাষাবাদের পরামর্শ দিই।”
 

আর্কাইভ