• ঢাকা রবিবার
    ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
ভাগ্যে জোটেনি সরকারি ঘর

ফরিদপুরে ঝুঁপড়ী ঘরে মন্টু দাসের মানবেতর বসবাস

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২০, ২০২৪, ১১:২১ এএম

ফরিদপুরে ঝুঁপড়ী ঘরে মন্টু দাসের মানবেতর বসবাস

ফরিদপুর প্রতিনিধি

বয়সের ভাড়ে আগের মতো পেশাগত কাজ করতে পারেন না মন্টু দাস (৭৫)। অভাব অনটনে চলে মন্টু দাস ও তার স্ত্রী রাধা রানী দাসের মানবেতর  জীবন । বসবাস করেন পলিথিন আর পাটখড়ি দিয়ে তৈরি ঝুঁপড়ী ঘরে। বৃষ্টির মৌসুমে সামান্য বৃষ্টির পানিতে ভীজে যায় ঝুঁপড়ী ঘরের মেঝে। কখনও ভাগ্যে জোটেনি সরকারী ঘর।

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের মোড়হাট গ্রামের ঋষি পাড়ায় গিয়ে এমনি চিত্র চোখে পড়ে। মন্টু দাস ওই গ্রামের মৃত সদানন্দ দাসের ছেলে। তিন কন্যা ও এক পুত্রের জনক। ছেলে-মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে। ছেলেটা তার বউ বাচ্চা নিয়ে আলাদা সংসার করেন। পৈতৃক পৌনে তিন শতক জমির উপর অর্ধেকে বুইড়া-বুড়ি বসবাস আর বাকি অর্ধেকে বসবাস করেন ছেলেটা। এর বাইরে নেই কোন জমিজমা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাঁশের একটি লাঠিতে ভর করে ঝুপড়ী ঘর থেকে ঠুকঠুক করে বেরিয়ে আসে মন্টু দাস। পরণে টেট্টনের পুরান লুঙ্গি ও গায়ে কুকড়ানো পাঞ্জাবী। কোন মতে হেটে হেটে ঝুপড়ী ঘরের সামনে এসে দাড়ায়। এসময় তার স্ত্রীও পাশে এসে দাড়ায়।

তখন প্রতিবেদকের  কথা হয় মন্টু দাসের সাথে। তিনি মলিন মূখে জানান, বাবা এহে-নে আর পারি না কামাই করতে। ৬০ বছর ধরে বাঁশ ও বেত দিয়ে হরেক রকমের মাল বানিয়ে হাটে ও গ্রামে বেঁচে সংসার চালিয়েছি। ছওয়াল ও মাইয়াদের বড় করে বিয়ে দিয়েছি। ছওয়ালটা বউ-বাচ্চা নিয়ে আলাদা থাকে। ছেলেটা সেলুনের কাজ করে যা কামাই করে তাতে ওদের সংসার চলে কোন মতে। আমাকে দেখবে কেমনে? তারপরও খেয়াল রাখে।

তিনি বলেন, আমি বৃদ্ধ হয়ে গেছি। কোন রোজগার করতে পারি না। টাহা-পয়সা নেই। পেট চলে না, ঘর দিবো ক্যামনে। তাই পলিথিন ও পাটখড়ি দিয়ে ঘর বানিয়ে থাকি। দেওয়া (বৃষ্টি) আসলে ঘরের মধ্যে পানি পড়ে।

সরকারী কোন সুযোগ সুবিধার পেয়েছেন কি না?  এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, আমাদের খবর কেউ নেয় না বাবা।  শুনি, গরীবদের সরকার ঘর করে দেয়। আমরা তো ঘর পাই না। সরকার যদি একটা ঘর দিতো, বৃদ্ধ বয়সে শান্তি পেতাম।

এ ব্যাপারে গট্টি ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লাভলু জানান, মন্টু দাসকে অনেক আগে একবান্ডেল ঢেউ টিন দিয়েছিলাম। আসলে এক বান্ডেল টিনে ঘর হয় না। তাই সরকারীভাবে কখনও ঘর আসলে সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে তাকে ঘর দেওয়ার জন্য। পাশাপাশি এবছর শিশু কার্ড বিতরণের সময় তার স্ত্রীর নামে একটি কার্ড করে দেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে  উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আনিছুর রহমান বালী জানান, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির উপকারভোগী বাছাইয়ে এ ধরনের মানুষের অগ্রাধিকার থাকা উচিত। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বলবো এ সকল পরিবার যেনো বিভিন্ন সরকারি সহায়তার আওতায় আসতে পারে, সেভাবে সুবিধাভোগীর তালিকা করতে।
 

দেশজুড়ে সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ