প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৬, ২০২৪, ১০:৪৫ পিএম
সাতক্ষীরা আশাশুনি থানা ও ডিবি পুলিশের যৌথ অভিযানে ধর্ষণের পর হত্যা মামলার প্রাধান আসামী কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম তাঁর কনফারেন্স রুমে এক প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে ঘটনা ও গ্রেফতারের বিবরণ সম্পর্কে সাংবাদিক দের জানান।
প্রেস ব্রিফিং এ পুলিশ সুপার জানান, আটককৃত আসামী মোঃ রেজোয়ান কবির ওরফে জনি (২২)। ভিকটিম নূসরাত জাহান রাহি (০৯) এর বাড়ী আসামীর বাড়ীর পাশে। ভিকটিম সম্পর্কে আসামীর প্রতিবেশী ভাতিজি। আসামী ইতিপূর্বে ঢাকার একটি লিফট কোম্পানীতে চাকুরী করতো। চাকুরী করা কালীন একটি মেয়ের সাথে সম্পর্ক করে ০৯ (নয়) মাস আগে বিয়ে করে। বিগত ৪/৫ মাস আগে আসামীর চাকুরীটি চলে যাওয়ায় সে ঢাকা থেকে বাড়িতে চলে আসে। আসামীর চাকুরী না থাকার কারণে সে অর্থনৈতিক সমস্যায় ভুগতেছিল এবং নেশাগ্রস্থ হয়ে পড়ে। তার পিতার নিকট বিভিন্ন সময় টাকা চেয়ে না পেয়ে সে বিকল্প চিন্তা করে। তখন তার ভিকটিম নুসরাত জাহান রাহি’র কানে থাকা স্বর্ণের এক জোড়া রিং এর কথা মনে পড়ে। তার প্রেক্ষিতে গত ১৪ সকাল ১১টার দিকে ভিকটিম নুসরাত জাহান রাহি তার বান্ধবী মিতা বসু (০৮) এর বাড়ীর সামনে খেলা করছিল। সে সময় আসামী ভিকটিমকে মোড়ে যাওয়ার নাম করে ডাক দিয়ে নিয়ে যায়। পথিমধ্যে যাওয়ার সময় মাওলানা মোঃ সোলাইমান আজিজীর পুকুরের পাশে যেয়ে আসামী ভিকটিমকে বলে চলো আমরা হলুদ তুলতে যাই। তারপর হলুদ ক্ষেতে গিয়ে ভিকটিমের কানে থাকা স্বর্ণের রিং জোড়া হাত দিয়ে খুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। ভিকটিম স্বর্ণের রিং জোড়া দিতে অস্বীকার করে এবং বাড়ীতে গিয়ে বাবা-মাকে বলে দিতে চায়। একপর্যায়ে আসামী মোঃ রেজোয়ান কবির জনি ভিকটিম নূসরাত জাহান রাহির কানে থাকা স্বর্ণের কানের রিং জোড়া জোরপূর্বক খুলে নেয় এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপরে ভিকটিমের লাশটা যেন কেউ খুজে না পায় তার জন্য ভিকটিমের গায়ে থাকা গেঞ্জি ছিড়ে হাত এবং পা বেধে হলুদ ক্ষেতের পাশে পুকুরের মধ্যে ফেলে দেয়। একই তারিখ দুপুর ১টার দিকে আসামী কানের রিং জোড়া নিয়ে বুধহাটা বাজারে যেয়ে পলাশ জুয়েলার্স এর দোকানে অজয় পাইনের কাছে নয় হাজার টাকায় বিক্রি করে। ইতিমধ্যে স্থানীয় লোকজন নুসরাত জাহান রাহির লাশ পুকুরে দেখতে পেয়ে থানা পুলিশকে খবর দিলে থানা পুলিশ দ্রুততম সময়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং বিভিন্ন লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এক পর্যায়ে থানা পুলিশ আসামী মোঃ রেজোয়ান কবির জনিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইং-১৫/১২/২০২৪ তারিখ থানায় নিয়ে আসে।
প্রেস ব্রিফিং এ পুলিশ সুপার আরও জানান, তাঁর নির্দেশক্রমে মোঃ আমিনুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী মোঃ রেজোয়ান কবির জনি (২২) সকল ঘটনা পুলিশকে খুলে বলে এবং ভিকটিমকে হত্যার কথা স্বীকার করে। আসামীর দেওয়া তথ্য মতে থানা এবং ডিবি পুলিশের টিম আসামীকে নিয়ে বুধহাটা বাজারস্থ পলাশ জুয়েলার্সের দোকানে গিয়ে ভিকটিমের স্বর্ণের কানের রিং জোড়া আসামীর দেখানো ও সনাক্ত মতে অজয় পাইনের নিকট থেকে উদ্ধার করে।আসামীকে আশাশুনি থানার মামলা নং ০৪ তাং ১৫/১২/২০২৪ খ্রী: এ প্রধান আসামী হিসাবে বিঞ্জ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার।