• ঢাকা শুক্রবার
    ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১

দশমিনায় সরকারি শতাধিক খাল দখল

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৫, ২০২৪, ০৩:২২ পিএম

দশমিনায় সরকারি শতাধিক খাল দখল

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

এক সময়ে পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ছিল খাল। জেলা শহর ও বিভিন্ন উপজেলায় নৌকাযোগে খাল দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি করা হতো।

উপজেলার প্রায় শতাধিক খাল দিয়েই এক সময় নৌকার চলাচল ছিল। বর্ষা মৌসুমে জোয়ার-ভাটার পানি আসত। নদীর সঙ্গে খালের ছিল সংযোগ। পানির সঙ্গে পলি এসে বাড়ত কৃষি জমির উর্বরতা। আবার খাল বেয়েই চলে যেত গ্রাম-গঞ্জে জমা বৃষ্টির পানি; কিন্তু ওই সব খাল এখন প্রায় নিশ্চিহ্ন। উপজেলার শতাধিক খালের কোনো হদিস নেই।

কৃষি খাসজমি দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্তারা অনেক বছর ধরে বন্দোবস্ত দিয়েছেন এসব খাল। পুনর্বাসন করেছেন ভূমিখাদকদের। ফলে পানি নিষ্কাশনের মাধ্যমে খালগুলো দিয়ে নদী কিংবা সাগর থেকে পলিমাটি আসতে না পারায় ফসলি জমি উর্বরতা শক্তি হারিয়েছে। ক্ষতিকর কীটনাশক প্রয়োগ ছাড়া উপকূলীয় জনপদে এখন আর ফসল উৎপাদন হচ্ছেন না।

সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, উপজেলা সদর ইউনিয়নের হাজিকান্দা এলাকার উত্তর অংশ তেঁতুলিয়া আর দক্ষিণ রণগোপালদী ইউনিয়ন পর্যন্ত বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর অবস্থান। বুড়াগৌরাঙ্গ ও তেঁতুলিয়া নদী থেকে প্রাকৃতিকভাবে উৎপত্তি হওয়া প্রায় শতাধিক খাল দিয়ে উপকূলীয় দশমিনা উপজেলার ফসলি জমিতে পলি মাটি এসে পড়ত। গ্রাম থেকে গ্রামে আর পার্শ্ববর্তী উপজেলা-জেলায় ছিল নৌ যোগাযোগ। দক্ষিণাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী বাউফল উপজেলার কালাইয়া বাজার ও গলাচিপার উলানিয়া বাজারে নৌকা ও ট্রলারে মালামাল আনা-নেওয়া হতো; কিন্তু সেই খালগুলো মানচিত্রে থাকলেও বাস্তবে অস্তিত্ব নেই। চলে না নৌকা, পড়ে না ফসলি জমিতে পলিমাটি। ফলে হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি উর্বরতা শক্তি হারিয়ে ফেলেছে।

ভুক্তভোগী কৃষক মোজাম্মেল ও সেকান্দার বলেন, খালের জমি ভরাট করে নির্মাণ করা হয়েছে স্থাপনা। এছাড়া অপরিকল্পিত বাঁধ ও কালভার্ট নির্মাণ করায় খালগুলো ভরাট হয়ে গেছে। ফলে বর্ষা হলে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। আর শুষ্ক মৌসুমে দেখা দেয় তীব্র পানি সংকট।  

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের নিষ্কাশনের খালগুলো কালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে নদীর পানি উপজেলার ভেতরে প্রবেশ করতে না পারায় নদীর তীর ভাঙনের সৃষ্টি হচ্ছে। উপজেলার ভুক্তভোগী কৃষকরা খালগুলো দখলমুক্ত করার ও ভরাট হওয়া খালগুলো পুনরায় খনন এবং অবৈধ বন্দোবস্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয় বক্তব্য নেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরতিজা হাসানের সরকারি নাম্বারে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।

আর্কাইভ