প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১২, ২০২৪, ০৯:৩৫ পিএম
ফেনীতে অপহরণের চার দিন পর ডোবা থেকে স্কুলছাত্র আহনাফ আল নাশিতের (১০) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে ফেনীর শহরতলীর দেওয়ানগঞ্জ রেললাইনের পাশের ডোবা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন, সালাহউদ্দিন মোড় এলাকার বাসিন্দা আশরাফ হোসেন তুষার (২০), মো. মোবারক হোসেন ওয়াসিম (২০) ও ওমর ফারুক রিফাত (২০)।
নিহত শিক্ষার্থী নাশিত ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামের আনসার আলী ফকির বাড়ির মাঈন উদ্দিন সোহাগের ছোট ছেলে। পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সে ফেনী পৌরসভার একাডেমি এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিল।
পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার (৮ ডিসেম্বর) একাডেমির আতিকুল আলম সড়কের লাইট হাউজে কোচিং শেষ করে স্থানীয় বায়তুল খায়ের জামে মসজিদে নামাজ পড়তে যায় নাশিত। নামাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে তাকে অপহরণ করে দেওয়ানগঞ্জ এলাকার নিয়ে জুসের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে অচেতন করা হয়। আসামিরা নাশিতের ছবি তুলে তার বাবা মাঈন উদ্দিন সোহাগের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। টাকা দিতে বিলম্ব হওয়ায় আসামিরা নাশিতকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মরদেহ উদ্ধার শেষে সংবাদ সম্মেলনে ফেনীর পুলিশ মো. হাবিবুর রহমান বলেন, নাশিতের বড় ভাই নিশাতের সঙ্গে বন্ধুত্বের সুবাদে নাশিতের পরিবারের সঙ্গে আসামি তুষারের পরিচয় ছিল। সেই সুযোগে রবিবার আতিকুল আলম সড়কের লাইট হাউজের সামনে থেকে নাশিতকে অপহরণ করে দেওয়ানগঞ্জে নিয়ে যায়। মুক্তিপণ হিসেবে নিহতের বাবার কাছে ১২ লাখ টাকা দাবি করে তুষার। মুক্তিপণের টাকা দিতে বিলম্ব হওয়ায় লোকজন জানাজানি হওয়ার ভয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে রেললাইনের পাশে ডোবায় ফেলে দেয় অপহরণকারীরা।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, এ ঘটনায় শিক্ষার্থীর বাবা ৯ ডিসেম্বর ফেনী মডেল থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। পুলিশ বাদীর সঙ্গে সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুঁজি করে। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে তুষারকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হলে তার দেওয়া তথ্যমতে দেওয়ানগঞ্জ এলাকার ডোবা থেকে নাশিতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অপর দুই আসামিকে রাতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়েছে। হত্যার মূল রহস্য উদঘাটনে কাজ চলছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।
নিহত নাশিতের বাবা মাঈন উদ্দিন সোহাগ বলেন, ‘‘আমি মুক্তিপণের টাকা দিতেও রাজি ছিলাম। তারপরও তারা আমার ছেলেকে প্রাণে মেরে ফেলল।’’