প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১০, ২০২৪, ১১:১৩ এএম
উত্তরের জেলা লালমনিরহাটে এ বছর ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে মাত্র ২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। কিন্তু আলুর বীজ, সার, কীটনাশক ও মজুরের দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন ব্যয় বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।
আলুর দাম বৃদ্ধি দিয়ে দেশব্যাপী তুমুল আলোচনা সমালোচনার মধ্যে এবার নতুন সংকট দেখা দিয়েছে। আলুর বীজ সংকট সহ সারের কারসাজি, কীটনাশক ও অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধিতে বাড়ছে আলুর উৎপাদন খরচ। মানসম্মত বীজের অভাবে আশাহত হয়ে অনেকেই আলু উৎপাদন করা থেকে সরে আসছেন। এতে আলু উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার পাশাপাশি বাজারে আলুর মূল্য নিয়ে কারসাজির আশঙ্কা কাটছেনা।
তারপরও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় স্বল্পমেয়াদী আগাম আমন ধান ঘরে তুলে সেই জমিতে আলুর জন্য হালচাষ, পরিচর্যা, সার প্রয়োগ, হিমাগার থেকে বীজ সংগ্রহ ও বপনে ব্যাস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। উৎপাদন ব্যয় বাড়লেও ভাল ফলনে ন্যায্য দাম না পেলে ক্ষতির সম্মুখীন হবে কৃষক।
এ-দিকে উৎপাদন খরচ বৃদ্দ্বি পাওয়ায় এ বছর জেলায় আলুর লক্ষ্যমাত্রা উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে কৃষি অফিস বলছে, বীজ সংকট সহ সকল সংকট দুরীকরণে সচেতনতা ও নজরদারি করা হচ্ছে। মানসম্মত আলুর বীজ ও প্রয়োজনীয় সার কীটনাশক সরবরাহ করা হলে দেশে সহনীয় দামে আলুর চাহিদা পুরণ হবে।
লালমনিরহাটে বীজের চাহিদা ১২ হাজার ৮ শো ৪৪ মেট্রিক টন প্রতি কেজি বীজ ৬৮ টাকা কেজি সরকারি নির্ধারিত হলেও ৮০/৯০ টাকা ব্রিক্রি হচ্ছে।আর কার্টুন আলু বীজ ৬০৪ টাকা পড়ছে।
কালীগঞ্জের কাকিনা এলাকার কৃষক হযরত আলী বলেন, আমি প্রায় ৪ একর জমিতে আলু চাষের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু চলতি মৌসুমে আলুর বীজের সংকট দেখা দিয়েছে। এবার মনে হয় আলু চাষ করা হবে না।
আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা এলাকার কৃষক ফজলার রহমান বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার আলুর বীজের চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি কৃষি উৎপাদনে ব্যবহৃত উপকরণের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে এবার আলু চাষ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি।
লালমনিরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. সাইখুল আরিফিন বলেন, লালমনিরহাটে যে তুলনায় আলু বীজের প্রয়োজন সে তুলনায় উৎপাদন নেই। বীজ সংগ্রহেও নেই। এর মূলত সমস্যা হচ্ছে আলু বীজ এবং খাবার আলুর মধ্যে পার্থক্য কম থাকা। স্থানীয় কৃষকরা নিজের উৎপাদিত আলু থেকে বীজ সংগ্রহ করে রেখেছে, তাদের বীজ সংকট নেই। ব্যবসায়ীদের একটি চক্র স্টক করে রাখার কারণে দাম বৃদ্ধি পেয়েছিল। অন্যদিকে, যে পরিমাণ বীজের দরকার তার তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ায় আলু বীজের সংকট দেখা দিয়েছে।