প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২৪, ১০:৪৮ এএম
ফরিদপুরের সদরপুরে নারী দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বহু বিত্তবান ব্যক্তিকে জিম্মি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র। উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে চক্রটি একাধিক ব্যক্তিকে প্রেমের ফাঁদের ফেলে নিঃস্ব করেছে। কিছুদিন আগে এই চক্রটির খপ্পরে পড়েন সদরপুরের মুজাহিদ মৃধা। পরবর্তীতে এ ব্যাপারে তিনি বাদী হয়ে সদরপুর থানায় ৯ জনসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।
থানা সূত্রে জানা যায়, হঠাৎ করে মোবাইল ফোনে রং নম্বরে অজ্ঞাতপরিচয় এক মেয়ের সঙ্গে পরিচয় হয় মুজাহিদ মৃধার। তাদের মধ্যে কয়েক দিন মোবাইল ফোনে কথাবার্তা চলতে থাকে। এক পর্যায়ে অজ্ঞাতপরিচয় মেয়েটি তাকে ফোন দিয়ে বাইশরশি জমিদার বাড়িতে আসতে বলে। তিনি সরল বিশ্বাসে ওই স্থানে যাওয়ার পর তাকে ওই মেয়েটি অটোবাইকে উঠতে বলে। অটোযোগে ঘোরাফেরার এক পর্যায়ে ওই মেয়েটি কৌশলে পূর্ব শৌলডুবী এলাকার সাবেক মেম্বার শেখ ফারুকের বাড়িতে একটি টিনের ঘরে নিয়ে মুজাহিদকে আটক করে। এরপর ওই চক্রের কয়েকজন ব্যক্তি মুজাহিদকে এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং প্রাণনাশের ভয় দেখায়। পরে তার নিকট থেকে মুক্তিপণ বাবদ ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে জোর করে ৪টি সাদা নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে তার স্বাক্ষর নেয়। বিষয়টি মুজাহিদের স্বজনরা জানতে পেরে স্থানীয় লোকজনদের নিয়ে রাতের বেলা ফারুক মেম্বারের বাড়িতে গিয়ে সোহরাব খালাসি নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে এবং মুজাহিদকে উদ্ধার করে। ওই সময় চক্রের অন্য সদস্যরা পালিয়ে যায়। বিষয়টি সদরপুর থানা পুলিশকে অবহিত করলে তারা সোহরাব খালাসিকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে কয়েকজনের নাম-ঠিকানা জানা যায়।
এ মামলায় ইতিমধ্যে এজাহারভুক্ত আসামি ভিকটিম লিমা আক্তার, শেখ ফারুক মেম্বারের স্ত্রী রেনু বেগম, সোহরাব খালাসী, মো. রবিন খান, মৌসুমী আক্তারকে গ্রেপ্তার করে ফরিদপুর জেলহাজতে প্রেরণ করে সদরপুর থানা পুলিশ।
কৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান তিতাস জানান, আমার ইউনিয়নে এমন একটি চক্র আছে আমি আগে অবগত ছিলাম না। এই চক্রকে যদি দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় না আনা হয়, তবে আরো বহু ব্যক্তি এই চক্রের খপ্পরে পরে নিজের সর্বস্ব হারিয়ে ফেলবে।
এ ব্যাপারে ওই মামলার তদন্তের দায়িত্বে থাকা এসআই তানভীর জানান, অভিযান চালানোর জন্য ফোর্সের সংকট রয়েছে, তারপর আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে ৫ জনকে গ্রেফতার করেছি। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ফরিদপুরের সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল মোতালেব জানান, এই মামলায় ইতোমধ্যে আমরা ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, অপহরণ চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে নারী সদস্যকে দিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলত। তারপর কৌশলে ডেকে নিয়ে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় করত।