• ঢাকা শুক্রবার
    ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১
ময়মনসিংহে সারজিস আলম

ব্যর্থ হলে কারোরই অস্তিত্ব রাখবে না খুনি হাসিনা

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩০, ২০২৪, ১০:৪৭ পিএম

ব্যর্থ হলে কারোরই অস্তিত্ব রাখবে না খুনি হাসিনা

ময়মনসিংহ ব্যুরো

জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, খুনি হাসিনা ও তার দোসররা সব দিক দিয়ে চেষ্টা করছে আমরা যেন সফল না হই। কোনোভাবে যদি আমরা ব্যর্থ হই কারোরই অস্তিত্ব খুনি হাসিনা রাখবে না।

শনিবার সকালে ময়মনসিংহ নগরীর টাউন হল অ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ৫৫ জনের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

সারজিস আলম বলেন, ৫ আগস্টের আগে অনেক শহিদ পরিবার রয়েছে, যাদের লাশ দাফন করতে দেওয়া হয়নি, তাদের বাড়িতে থাকতে দেওয়া হয়নি। তাদের হয়রানি করা হয়েছে। এখন যদি খুনি হাসিনা আসে এখনই একই কাজ করবে তারা। সেই জায়গা থেকে আমাদের দায়িত্ব, যে স্বপ্ন নিয়ে, যে স্পিরিট নিয়ে অভ্যুত্থান হয়েছে তাকে রক্ষা করা।

তিনি বলেন, আমরা আমাদের জায়গা থেকে সরকারের যেমন গঠনমূলক সমালোচনা করব, একইভাবে আমরা প্রশাসন থেকে শুরু করে সার্বিকভাবে তাদের কাজে সহযোগিতা করব।

পুলিশ প্রশাসন, জেলা ও বিভাগীয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানিয়ে সারজিস বলেন, যারা এই অভু্যত্থানে রক্তাক্ত হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে জড়িত ছিল, যাদের ভিডিও ফুটেজ, ছবি, ক্লিয়ার (স্পষ্ট) ডকুমেন্ট রয়েছে সে যেই পরিচয়েরই হোক না কেন, শাসি্তর আওতায় আনতে হবে। আমরা যদি মনে করি সে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগের নেতা, সে পুলিশের সদস্য ছিল, সে সরাসরি হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে জড়িত; ছবি আছে, ডকুমেন্ট আছে, ভিডিও ফুটেজ আছে। তারপরও কিছু করাটা রিস্কি। তাহলে আমরা মনে করি আপনারা আমাদের এই অভ্যুত্থানের স্পিরিট ধারণ করেন না, আপনি তাহলে এই দায়িত্ব ছেড়ে অন্য জায়গায় যেতে পারেন। এটা শুধু আমাদের নয়, এখন যারা প্রশাসনের দায়িত্ব পালন করছে এটা তাদের অস্তিত্বের সঙ্গে সম্পৃক্ত।

তিনি বলেন, যাদের বিরুদ্ধে ডকুমেন্ট আছে তাদের বিচারিক প্রক্রিয়ায় যেন বিন্দুমাত্র দয়া দেখানো না হয়। এটা যদি করা হয় বা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে যদি করা শুরু হয় তাহলে এক সময় দেখা যাবে কোনো বিচারই হচ্ছে না। মিসরে যেটা হয়েছিল যে অসংখ্য স্বপ্ন দেখানোর পরে সরকার এলো। এক বছর পর সে সরকার আর টিকল না। নতুন করে সামরিক শাসনের কাছে গেল। দেশি-বিদেশি চক্রান্ত শুরু হলো। আমাদের কঠোর ব্যবস্থা প্রত্যেকের জায়গা থেকে পূরণ করতে হবে। তিনি বলেন, কালো শকুনদের যে খারাপ নজর, যে চক্রান্ত সেটা শেষ হয়নি।

সারজিস আলম বলেন, আমরা যদি বেঁচে থাকি, কোনো শহিদ পরিবার বা আহত যোদ্ধার গায়ে একটা আঁচড় পর্যন্ত লাগতে দেব না। কোনো শহিদ পরিবার বা আহত ভাইকে দুর্দশাগ্রস্ত জীবন অতিবাহিত হতে হবে না।

বক্তব্য শেষে ইসকন নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সারজিস বলেন, সাম্প্রদায়িক যে সম্প্রীতি রয়েছে তা বাংলাদেশে থাকবে। যে কোনো ধর্মাবলম্বী হতে পারে তারা আমাদের ভাই। কিন্তু ধর্মকে ব্যবহার করে যদি কোনো ধরনের উগ্র সাম্প্রদায়িক কার্যকলাপে লিপ্ত হয়, সেটা ইসকনের মতো কোনো উগ্রবাদী সংগঠন হোক বা অন্য যে কোনো ধর্মের সংগঠন হোক এর বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান সোচ্চার থাকবে।

তিনি বলেন, আমরা চাই উগ্রবাদী যে সংগঠন রয়েছে, যারা ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষের মাঝে সাম্প্রদায়িক সংঘাত ঘটাতে চায় এবং দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়, সেসব উগ্রবাদী সংগঠনকে যেন নিষদ্ধি করা হয়। এই দাবি আমাদের সংগঠন থেকে জানিয়ে দিতে চাই।

ফাউন্ডেশনের সিইও মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ জানান, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ময়মনসিংহ বিভাগের ৯৩ জন শহিদ পরিবারের মধ্যে কাগজপত্র ঠিক থাকায় ৫৫ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক পরিবারকে ৫ লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়েছে। বাকিরাও এই সহায়তা পাবেন।

এ সময় ময়মনসিংহের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ইউসুফ আলী, অতিরিক্ত ডিআইজি মো. শরিফুর রহমান, জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামীম হোসেন, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ড. তুবাইল জান্নাত, শহিদ আহনাফের মা জারতাস পারভীন বক্তব্য দেন। 

আর্কাইভ