প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২৪, ১১:৩০ পিএম
আপন চাচা ভাতিজার জানাযা হলো একই খাটিয়ায়।একই পরিবারের দুই শিশুর এমন মর্মান্তিক অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় শোকে স্তব্ধ হয়েছে পুরো এলাকা।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের রশিবপুরা গ্রামে সংঘটিত হয়েছে এই মর্মান্তিক ঘটনা। সোমবার (১৮ ই নভেম্বর) ওই গ্রামের রশিবপুরা দাখিল মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত হয় শিশু দুটির জানাযার নামাজ। পরে তাদের লাশ দাফন করা হয়।
অগ্নিকাণ্ডে নিহত দুই শিশু আসাদ মুন্সীর ছেলে ইয়াসিন মুন্সি (৩) ও ছিদ্দিক মুন্সীর ছেলে ইসমাইল মুন্সি (৪)। অত্যন্ত হতদরিদ্র পরিবারের দুইটি পুত্রসন্তান হারিয়ে তারা নির্বাক। ছিদ্দিক মুন্সীর এক পুত্র ইসমাইল মুন্সি(৪) এবং মেয়ে অশনী(০৭)। অপরদিকে আসাদ মুন্সীর এক ছেলে ইয়াসিন মুন্সি(৩) ও দুই মেয়ে অহনা(১৩) ও তোহা(৭)। এদের মধ্যে পরিবারটির দুই পুত্রসন্তান মারা যায়।এর আগে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে ইসমাইল মুন্সির শরীরের ৯০ ভাগ এবং ইয়াসিনের ৬৮ ভাগ পুড়ে যায়। রোববার (১৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে দশটার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
অগ্নিদগ্ধ শিশুদের চাচা উজ্জ্বল হোসেন জানান, ইয়াসিন ও ইসমাইল রোববার সকালে রান্নাঘরে খেলতে থাকে। এ সময় ঘরে কোন অভিভাবক ছিল না। এক পর্যায়ে তারা চুলায় আগুন জ্বালালে মুহূর্তেই আগুনের শিখা পাটকাঠির বেড়ায় লেগে দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে। তখন তারা ভয় পেয়ে রান্নাঘর সংলগ্ন গোসলখানায় আশ্রয় নেয় । এদিকে আগুনের শিখায় গোসলখানার বেড়া পুড়তে থাকে । একপর্যায়ে আগুনের লেলিহান শিখা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে গোসলখানার মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। এলাকাবাসী আগুন নিভাতে চেষ্টা করলেও তারা তখনো জানতো না, শিশু দুটি বাথরুমে আটকা পড়েছে। এ সময় শিশু দুটির আর্তচিৎকার শুনে ঘরে প্রবেশ করে এবং শিশু দুটিকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে ওই গ্রামের বাসিন্দা মাদ্রাসা সুপার মাওলানা মোঃ ইদ্রিস আলী জানান, অত্যন্ত মর্মান্তিকভাবে অগ্নিদগ্ধ শিশু দুটিকে উদ্ধার করে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের ঢাকা বার্ন ইউনিটে প্রেরণ করা হয়।
এ ব্যাপারে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মৌলি চৌধুরী জানান, অগ্নিদগ্ধ ইয়াসিনের ৬৮ ভাগ এবং ইসমাইলের ৯০ ভাগ পুড়ে গেছে। তাদের ঢাকায় বার্ন হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।