প্রকাশিত: নভেম্বর ৩, ২০২৪, ০৭:৩৬ পিএম
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর) বলেছেন, শেখ হাসিনা পালানোর পরে রাষ্ট্রপতি বলেছিলেন পদত্যাগপত্র পেয়েছেন। কিছুদিন পরে বললেন পদত্যাগপত্র তিনি পাননি। তিনি কচ্ছপের মতো আচরণ করছেন, বিপদ দেখে মাথা গুটিয়ে নিয়েছেন, বিপদ গেলে আবার মাথা বের করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে উদ্দেশ করে চরমোনাই পীর বলেন, ‘সম্মানের সঙ্গে পদত্যাগ করে চলে যান। আর তা না হলে আপনাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করাবো।’
রোববার (৩ নভেম্বর) বিকেলে বাগেরহাটের ঐতিহাসিক খান জাহান আলী (রহ.) মাজার মাঠে ফ্যাসিবাদ ও তাদের দোসরদের আগামী নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা এবং পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চরমোনাই পীর বলেন, ‘আমরা কারও লেজুড়বৃত্তিক হতে চাই না। বিগত সময়ে যারা ক্ষমতায় গিয়েছেন তারা ইসলামের বারোটা বাজিয়েছেন। ৫ আগস্টের পরে ইসলামী রাষ্ট্রের পর্যায়ে যাওয়ার একটি পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ইসলামী দলগুলো একত্রিত হলে এবং একটি প্ল্যাটফর্ম গঠন করতে পারলে আশা করা যায়, ইসলামী রাষ্ট্র গঠন করা সম্ভব হবে। স্বাধীনতার পর থেকে যারা দেশের ক্ষমতায় বসেছেন তারাই স্বৈরাচার হয়েছেন। গত দেড় দশকের এক স্বৈরশাসকের কবল থেকে আল্লাহ আমাদের রক্ষা করেছেন। ছাত্র-জনতার জীবনের বিনিময়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশে আর কেউ স্বৈরশাসক হতে না পারে সেজন্য পিআর সিস্টেম বা সংখ্যানুপাতিক হারে নির্বাচন পদ্ধতি প্রবর্তন করতে হবে।’
বক্তব্যে তিনি জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যায় জড়িতদের বিচারের দাবি জানান। তিনি আওয়ামী লীগসহ সব দুর্নীতিবাজের অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে তাদেরকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করারও দাবি জানান।
বিশেষ অতিথি নায়েবে আমির আলহাজ হযরত মাওলানা অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল বলেন, আমরা দেশে লক্ষ করেছি, আওয়ামী স্বৈরাচার বিদায়ের পর অনেক নব্য স্বৈরাচার চাঁদাবাজি-দখলদারিত্বে লিপ্ত হয়েছে। তাদেরকে আওয়ামী লীগের পতনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সুস্থ রাজনীতি চর্চার আহ্বান জানাই।
ইসলামী আন্দোলনের বাগেরহাট জেলার সভাপতি হাফেজ মাওলানা মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘বাগেরহাট খান জাহান আলী (রহ.) এর পূণ্যভূমি। ইসলামী আন্দোলনের উর্বরভূমি এ বাগেরহাট। বাগেরহাট থেকে ইসলামের বিজয়ের সূচনা হবে ইনশাআল্লাহ।’
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাটে হাতপাখার বিজয় নিশ্চিত করানোর জন্য নেতাকর্মীদেরকে এখন থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) আলহাজ মাওলানা শোয়াইব হোসেন, জেলা কমিটির উপদেষ্টা আলহাজ মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক কাসেমী।
এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বাগেরহাট জেলা শাখার সহসভাপতি মাস্টার মকবুল হোসেন, এইচ এম সাইফুল ইসলাম, ফকির মো. শহিদুল ইসলাম, জয়েন্ট সেক্রেটারী মাওলানা ফারুক হোসাইন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মো. কবির হোসেন বাচ্চু পাইক, শ্রমিক আন্দোলনের জেলা সেক্রেটারী মুফতী নূরুজ্জামান, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সেক্রেটারী মুফতী তরিকুল ইসলাম, যুব নেতা মাওলানা আবু বকর, মাওলানা সালমান আশরাফী, ছাত্র নেতা আব্দুল আজিজ, হোসাইন আহমাদ, মোহাম্মাদুল্লাহ, মাহদী হাসান এবং জেলা ও উপজেলার অন্য নেতারা।