• ঢাকা বুধবার
    ১৬ অক্টোবর, ২০২৪, ১ কার্তিক ১৪৩১

ছেলের সঙ্গে এসএসসি পাশ সেই বাবা এইচএসসিতে ফেল

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৫, ২০২৪, ০৮:৪৬ পিএম

ছেলের সঙ্গে এসএসসি পাশ সেই বাবা এইচএসসিতে ফেল

নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরের বাগাতিপাড়ায় ছেলের সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ সেই বাবা ইমামুল ইসলাম এবার এইচএসসি পরীক্ষায় পাশ করতে পারেননি। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট থেকে বিএমটি শাখার মানব উন্নয়ন ট্রেডে তিনি চলতি এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।

তবে পরীক্ষা দিয়েই তিনি জর্ডানে পাড়ি জমিয়েছেন। আর তার ছেলে আবু রায়হান এসএসসি পাশের পর গত বছর দুবাই চলে যান। তাদের বাড়ি উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের চকতকিনগর গ্রামে।

মঙ্গলবার ফলাফল প্রকাশের পর মোবাইল ফোনে জর্ডান প্রবাসী ইমামুলের সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, চেষ্টা করেও পাশ করতে না পারায় মন খারাপ হলেও কষ্ট নেই। চেষ্টা করেছেন এটাই যথেষ্ট। তবে পাশ না করা পর্যন্ত পরীক্ষা দিয়ে যাওয়ার সংকল্প করেন।

এদিকে রেজাল্টের খবরে ছেলে দুবাই থেকে জর্ডানে তাকে ফোন করে সান্ত্বনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ঐকান্তিক ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সংসারের অভাব অনটনের কারণে অষ্টম শ্রেণি পাশের পরে আর স্কুলে যাওয়া হয়নি তার। পড়ালেখা ছেড়ে জীবিকার তাগিদে ২৪ বছর আগে ঢাকায় যান। সেখানে ১৮ বছর গার্মেন্টসে শ্রমিকের কাজ করেন।

২০১৬ সালে বাড়ি ফিরে মুদির দোকান দেন, কিন্তু লেখাপড়া করতে না পারার চাপা কষ্ট তাকে পীড়া দিত। অন্যদের মতো নিজেকেও যাতে একজন শিক্ষিত মানুষ হিসেবে পরিচয় দিতে পারেন সেই আশায় ২০২০ সালে ছেলের সঙ্গে কারিগরি শাখায় নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৪ দশমিক ৭৯ পান। আর ছেলে আবু রায়হান পেয়েছিলেন জিপিএ ৪ দশমিক ৮২।  বাবা-ছেলের উত্তীর্ণের পর তৎকালীন ইউএনও-ডিসি তাদের সংবর্ধনা দেন।

এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোছা. সামসুন্নাহার বলেন, ইমামুলের আগ্রহ দেখে তাকে বিনা ফিতে লেখাপড়া করানো হয়; কিন্তু তার অকৃতকার্যে সবারই মন খারাপ হয়েছে।

আর্কাইভ