• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বাড়িতে বাবার লাশ রেখে পরীক্ষা দেওয়া সেই আভা পেল ৩.৫০

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৫, ২০২৪, ০৮:৩৩ পিএম

বাড়িতে বাবার লাশ রেখে পরীক্ষা দেওয়া সেই আভা পেল ৩.৫০

খুলনা প্রতিনিধি

হত্যার শিকার বাবা আল আমিন শেখের মরদেহ বাড়িতে রেখে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন খুলনা নগরীর পূর্ব বানিয়াখামার এলাকার সুমাইয়া আমিন তানহা আভা। সরকারি পাইওনিয়ার গার্লস কলেজের শিক্ষার্থী আভা পরীক্ষার ফলাফলে পেয়েছে জিপিএ ৩.৫০। তবে তার আক্ষেপ, পরীক্ষায় পাস করেছে জানলে সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন তার বাবা।

আভা বলেন, গত ৮ জুলাই সন্ধ্যায় সন্ত্রাসীরা আমার বাবাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর একটি গ্যারেজের মধ্যে তাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সারারাত আমি বাবার মরদেহের সামনে কেঁদেছিলাম। পরদিন ৯ জুলাই আমার আইসিটি পরীক্ষা ছিল। ভেবেছিলাম পরীক্ষা দেবো না, কারণ পরীক্ষা দেওয়ার মতো মানসিক অবস্থা আমার ছিল না। কিন্তু মা, আত্মীয়-স্বজন ও সহপাঠীদের পীড়াপিড়িতে আমি পরীক্ষা দিতে যায়। মূলত, বাবা চাইতো আমি ভালোভাবে লেখাপড়া করি। বাবার কথা মনে করে পরীক্ষা দেই। পরীক্ষার হলে লিখতে পারছিলাম না, সহপাঠীরা আমাকে সাহস যোগায়। পরীক্ষা দিয়ে আসার পর বাবার মরদেহ দাফন করা হয়।

তিনি বলেন, পরীক্ষার ফলাফলে আমি খুশি। তবে বাবা বেঁচে থাকলে সেই সবচেয়ে বেশি খুশি হতো। এখন বাবার কথা অনেক মনে পড়ছে। তার স্বপ্ন ছিল আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে যেন চাকরি করি।

আভা বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অথবা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য চেষ্টা করবো। বুধবার ভর্তি পরীক্ষার কোচিংয়ে ক্লাস শুরু করব। যত কষ্টই হোক আমি লেখাপড়া চালিয়ে যাব, বাবার স্বপ্ন পূরণ করব।

আভার প্রতিবেশী বলেন, নিহত আল আমিনের একমাত্র মেয়ে আভা এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৩.৯৪ পেয়েছিল। ওর বাবার স্বপ্ন ছিল মেয়েকে উচ্চ শিক্ষিত করবে। আভা যে পরিস্থিতির মধ্যে পরীক্ষা দিয়েছিল তাতে ফলাফল কী হবে তা নিয়ে আমরা সংশয়ে ছিলাম। তবে সে ভালোভাবেই পাস করেছে। তার ফলাফলে আমরা সবাই খুশি।

আর্কাইভ