• ঢাকা রবিবার
    ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

দেশের সবচেয়ে বড় বিসর্জন অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুত কক্সবাজার সৈকত

প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২৪, ০৮:২৬ পিএম

দেশের সবচেয়ে বড় বিসর্জন অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুত কক্সবাজার সৈকত

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে প্রস্তুত বিসর্জন মঞ্চ, লাখো পর্যটকের আনাগোনা এখন লাবণী পয়েন্টে

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রতি বছরের মতো দেশের সবচেয়ে বেশি জনসমাগমের মধ্যে দিয়ে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। রোববার (১৩ অক্টোবর) সৈকতের লাবণী পয়েন্টের উন্মুক্ত মঞ্চে বিজয়া সম্মেলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হবে এই প্রতিমা বিসর্জন। কক্সবাজার জেলা ও আশপাশের এলাকার অর্ধশতাধিক মণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হবে এই স্থানে। যা ঘিরে পর্যটক ও পূজারি মিলে ৩ লাখেরও বেশি মানুষের সমাগম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্রতিমা বিসর্জন শেষ করতে সব প্রস্তুতিও গ্রহণ করেছে প্রশাসন। শনিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে জেলা প্রশাসন এ সংক্রান্ত এক প্রস্তুতি সভা করে। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধি, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নেতাসহ বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় প্রতিমা বিসর্জন ঘিরে চার স্তরের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

সভায় বক্তব্য রাখেন সেনাবাহিনীর ৯ ইসিবি কক্সবাজারের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর আহমেদ, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ, সিভিল সার্জন আসিফ আহমেদ হাওলাদার, জেলা বিএনপির সভাপতি শাহাজাহান চৌধুরী, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) উদয় শংকর পাল মিঠু ও সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) দীপক শর্মা দিপু প্রমুখ।

সভা শেষে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ সালাহ উদ্দিন জানান, সভায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্রতিমা বিসর্জন শেষ করতে সার্বিক প্রস্তুতি এবং উদ্যোগ সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে। সৈকতের লাবণী পয়েন্টের উন্মুক্ত মঞ্চে দুপুরের পর পরই বিভিন্ন মণ্ডপ থেকে আনা হবে প্রতিমা। আড়াইটা থেকে শুরু হবে প্রতি বছরের সম্মেলন বিজয়া সম্মেলন। বিকেল সাড়ে চারটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত সৈকতের সাগরে বিসর্জন হবে প্রতিমা।

তিনি জানান, বিসর্জন ঘিরে চট্টগ্রাম থেকে নৌবাহিনীর একটি ডুবরি দল সৈকতে দায়িত্ব পালন করবে। একই সঙ্গে লাইফ গার্ড কর্মীরা দায়িত্ব পালন করবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা চার স্তরের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় তৈরি করবে। পূজারি, আগত দর্শনার্থী ও পর্যটক মিলে বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম হবে। এদের জন্য পৌরসভা, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল, পুলিশ, জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান সুপেয় পানি সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে থাকবে চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য বিশেষ দল।

কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) উদয় শংকর পাল মিঠু জানিয়েছেন, ১৫১টি প্রতিমা ও ১৭০টি ঘটপূজা মিলিয়ে জেলায় ৩২১ টি মণ্ডপে চলছে দুর্গাপূজা। দেশের সবচেয়ে বড় এই বিসর্জন অনুষ্ঠান হবে সৈকতে। প্রশাসনের নিদের্শনা মতে প্রতিমা বহনকারি গাড়ি সারিবদ্ধভাবে আসবে এবং ফিরবে।

বিকেল ৫ টার মধ্যেই বিসর্জনের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, শহরের বাইরের পূজা মণ্ডপগুলোর প্রতিমা কলাতলী মোড় হয়ে এবং শহরের অভ্যন্তরের প্রতিমাগুলো প্রধান সড়কের হলিডে মোড় হয়ে লাবণী পয়েন্টের বিসর্জন অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছাবে। প্রতিমাগুলো স্ব স্ব মণ্ডপ থেকে গাড়িযোগে আনার সময় আনসার সদস্যরা নিরাপত্তা জোরদার করবে। পাশাপাশি প্রতিমাগুলো আনার সময় যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে এ লক্ষ্যে পুলিশের টহল দল নিয়োজিত থাকবে।

এদিকে, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ দুর্গোৎসব ঘিরে টানা চার দিনের ছুটিতে লাখো পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। কক্সবাজার আবাসিক হোটেল-মোটেল প্রতিষ্ঠানের দেয়া তথ্য বলছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন গড়ে ১ লাখ ২০ হাজারেরও বেশি পর্যটক এসে কক্সবাজারে অবস্থান করছেন।

আর্কাইভ