প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২৪, ০৩:২৪ পিএম
প্রবল বর্ষণ ও উজানের ঢলে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর ইউনিয়নের ২৩ ভেন্ট রেগুলেটর ভেঙে গেছে। এতে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট এবং ফেনীর সোনাগাজী ও দাগনভূঞাসহ আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তবে স্থানীয়রা জানান, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় রেগুলেটরি ভেঙে যাবার অন্যতম কারন।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় মাটি দেবে গিয়ে রেগুলেটরি ভেংগে পড়ে।
এ ছাড়া পানির তোড়ে রেগুলেটর দেবে গিয়ে কপাট ভেঙে গেছে। ভাটার সময় বন্যার পানি নামলেও জোয়ারের সময় এখন লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে পারে। বিষয়টি নিয়ে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং টিমসহ কাজ করছে। স্থানীয়রা জানান, রোববার গভীররাতের দিকে রেগুলেটরে ফাটল ধরে।
আজ ভোররাতে এটি মাঝ বরাবর দেবে গিয়ে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এতে আশপাশের এলাকায় ব্যাপক বন্যাতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহার এবং ফেনীর সোনাগাজী ও দাগনভূঞা উপজেলার মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা আরও জানান, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোটভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও তার সহযোগী মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী জেলা ও স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে রেগুলেটরের আশপাশে ব্যাপক বালু উত্তোলন করে বিক্রি করায় রেগুলেটরটি ঝুঁকিতে পড়ে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসাইন পাটোয়ারী জানান, রেগুলেটরের আশপাশের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হচ্ছে। এর আগে কোম্পানীগঞ্জ ৬৭ আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৫ হাজার আশ্রিত থাকলেও এর সংখ্যা অনেক বাড়ানো হচ্ছে।
নোয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুন্সী আমির ফয়সাল জানান, রেগুলেটর ধসে গেলেও বন্যার পানি নিষ্কাশনে কোনো বাধা সৃষ্টি হবে না। তবে প্রতিদিনকার ৪ থেকে ৫ ফুট উচ্চতার জোয়ার আসলে আগে এ পানি লোকালয়ে প্রবেশ করতে পারতো না এখন তা লোকালয়ে প্রবেশ করবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নে নদী ভাঙন রোধে উপকূলীয় এলাকায় নির্মাণাধীন ২৩ ভেন্টের রেগুলেটর প্র্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০০৫ সালে।
কোম্পানীগঞ্জের উপকূলে অব্যাহত নদীভাঙ্গন ঠেকাতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে `নতুন ডাকাতিয়া ও পুরাতন ডাকাতিয়া-ছোট ফেনী নদীর পানি নিস্কাশন প্রকল্পের` আওতায় কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুরে ২০০৫ সালে প্রথম ১৯ কোটি ৪৪ লাখ ৭৪ হাজার টাকা ব্যয়ে ২৩ ভেন্টের এ রেগুলেটর নির্মাণ শুরু হয় ।
রেগুলেটরের নির্মাণ কাজ শেষে ২৩টি ভেন্টে ২৩টি রেডিয়্যাল গেইট ও ফ্ল্যাব গেইট স্থাপন করা হয়। এ রেগুলেটরের পানি নিষ্কাশন ক্ষমতা ৭৫৬.১৫ ঘনমিটার/সেকেন্ড এবং এর পানি ধারন সমতল (+) ৪.০০ মিটার (পিডব্লিউডি)।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান জানান, রেগুলেটরটি ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরকে অবহিত করা হয়েছে তারা বিষয়টি দেখছেন। তবে বালু উত্তোলন করায় সময় সেখানে বেশ কয়েক বার অভিযান চালানো হয়।