প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৭, ২০২৩, ০৪:৩৬ পিএম
মাদারীপুর-৩ আসনে ভোটকেন্দ্রের দায়িত্ব পাওয়া ৩৭ জন শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। মাদারীপুর-২ আসনে নৌকার প্রার্থী শাজাহান খানের ভাই ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান খানের সঙ্গে নৌকার পক্ষে বৈঠক করায় এসব শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নান্নি খান অব্যাহতির এ আদেশ দেন।
এর আগে সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে শাজাহান খানের বাসভবনে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন শাজাহান খান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই বৈঠকের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।
বৈঠকে ওবায়দুর রহমান খানকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনাদের প্রাণপ্রিয় নেতা শাজাহান খান প্রধানমন্ত্রী দ্বারা নির্দেশিত হয়েছেন যে তিনের (মাদারীপুর-৩) আসনের উপরে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য এবং তিনের (মাদারীপুর-৩) প্রচার চালানোর জন্য। সেই হিসেবে আমরা কিন্তু তিনের (মাদারীপুর-৩) ওপরে বেশি দায়িত্ব পালন করতেছি। আপনাদেরও তিনে (মাদারীপুর-৩) সেইভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। তিনে (মাদারীপুর-৩) যদি আমার গোলাপ ভাইকে নির্বাচিত করতে পারি। তাহলে দাদায় (শাজাহান খান) ও গোলাপ ভাই মিলে দীর্ঘদিনের জন্য মাদারীপুরকে স্থিতিশীলতায় নিয়ে আসতে পারবে।’
শিক্ষকদের উদ্দেশে ওবায়দুর রহমান খান বলেন, ‘আপনারা নিকট আত্মীয়দের নৌকার পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানাবেন। ৩ (মাদারীপুর-৩) আসনে ভোটার উপস্থিত নিশ্চিত করবেন এবং ৩ (মাদারীপুর-৩) আসনের বাইরে যারা আছেন, তাদের নিকট আত্মীয়দের নৌকার পক্ষে কাজ করার জন্য দায়িত্ব পালন করবেন।’
এ বিষয়ে ওবায়দুর রহমান খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শিক্ষকদের তিনটি গ্রুপ। তারা অনেক দিন ধরেই আমাকে বলছিলেন, তিন গ্রুপকে এক করে দেওয়ার জন্য। আমি তাদের বলেছিলাম, ইলেকশন সামনে, পরে করে দিই। তারা এখনই এক হতে চাইলে আমি তাদের আসতে বলেছিলাম। পরে তারা আসেন। প্রসঙ্গক্রমে নির্বাচনের কথা উঠছে, মূলত সাংগঠনিক আলোচনাই হয়েছে। আর নির্বাচনের ব্যাপারেও কাউকে নৌকার পক্ষে ভোট চাইতে বলা হয়নি। বলেছি, নিকট আত্মীয়স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের মাদারীপুর-৩ আসনের প্রতি একটু বেশি গুরুত্ব দিতে বলতে। এটা কোনো নির্বাচনী প্রচারণা নয়।’
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আহমদ আলী বলেন, বিষয়টি রিটার্নিং কর্মকর্তার নজরে আসার পর পরই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে অবগত করা হয়েছে এবং আগামী ২ দিনের মধ্যে তদন্ত করে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের নির্বাচনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ভিডিওটি আমাদের নজরে আসার পর তা তদন্ত করে দেখার জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দিয়েছি। একইসঙ্গে তদন্ত প্রতিবেদন আসার আগপর্যন্ত ওই ৩৭ শিক্ষককে নির্বাচনী সব কর্মকাণ্ড থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় আরও কোনো শিক্ষক ছিলেন কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সভায় যে আলোচনা হয়েছে, তা অবশ্যই নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন। এ বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জেকেএস/