প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৭, ২০২৩, ১২:৫১ এএম
শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, খাগড়াছড়িতে লাল পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করে তা বিক্রি চলছে দুই শতাধিক পরিবারের সংসার। বন জঙ্গল ঘুরে গাছের ডাল ও পাতার আড়াল থেকে খুঁজে বের করছে লাল পিঁপড়ার ডিম।
খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি, মাটিরাঙ্গা, লক্ষ্মীছড়ি, গুইমারা ও পানছড়িতে প্রত্যক্ষভাবে এ পেশায় নিয়োজিত দুই শতাধিক পরিবার।
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার রামশিরা এলাকার জসিম উদ্দিন। বছর কয়েক আগেও মানুষের জমিতে কৃষি কাজ করা এ ব্যক্তি এখন জীবিকা নির্বাহ করছেন লাল পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহের মতো স্বাধীন পেশায়। লোকালয় কিংবা বন জঙ্গলে ঘুরে বিভিন্ন গাছের ডাল ও পাতায় বাসা বাঁধা লাল পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করা এখন তার পেশা। প্রতিদিন যা সংগ্রহ করেন তা বিকেলে বিক্রি করেন স্থানীয় এক বিক্রেতার কাছে। এতে অনেক ভালোই চলছে তার সংসার। প্রতি কেজি লাল পিঁপড়ার ডিম পাইকাররা বিক্রি করছেন ৭শ’ থেকে ৮শ’ টাকায়। ছুটির দিনকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার পিঁপড়ার ডিমের চাহিদা বেড়ে যায় বলে জানালেন বিক্রেতারা।
শুধু জসিম উদ্দিন নয়, তার মতো মাটিরাঙ্গা, মানিকছড়ি, লক্ষ্মীছড়ি ও পানছড়ির দুই শতাধিক শিকারি পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করে সংসার চালাচ্ছেন। বৈশাখ থেকে অগ্রহায়ণ মাস পর্যন্ত বন জঙ্গল ও বিভিন্ন বাগান ঘুরে গাছের ডাল ও পাতায় বাসা বেঁধে থাকা লাল পিঁপড়ার বাসা থেকে ডিম সংগ্রহ করা হয়। উচুঁ বাঁশের এক প্রান্তে একটি বাঁশের লাই সংযুক্ত করে তা দিয়ে গাছের ওপর থেকে সংগ্রহ করা হয় পিপঁড়ার ডিম। ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত একটানা সংগ্রহ শেষে টেবিলের ওপর রেখে জাল ও কাপড় ব্যবহার করে ডিম থেকে আলাদা করা হয় পিঁপড়া। তারপর ওজন করে তা বিক্রি করা হয় স্থানীয় পাইকার কাছে। প্রতি কেজি পিঁপড়ার ডিম বিক্রি করে শিকারিরা পান ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা। মৌসুমে প্রতিদিন একেকজন শিকারি দেড় থেকে দুই কেজি পর্যন্ত ডিম শিকার করেন।
স্থানীয় পাইকার মো. জাহাঙ্গীর আলম ও মো. জাকির হোসেন জানান, লাল পিঁপড়ার ডিম শৌখিন লোকদের বড়শি দিয়ে মাছ শিকার ও বিভিন্ন খামারে মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। স্থানীয় পাইকাররা ডিম সংগ্রহ করার পর রাতের মধ্যে তা পৌঁছে দেয়া হয় চট্টগ্রাম, ঢাকা ও ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ ও সংরক্ষণের কৌশল হাতে কলমে শেখানো গেলে অনেকের বিকল্প কর্মসংস্থান সম্ভব হবে।
সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন
জেকেএস/