প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩, ২০২৩, ০৩:২১ এএম
বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতান ও কবিয়াল বিজয় সরকারের জন্মভূমি নড়াইল-২ আসনে একজন ক্রিকেটার ও ভালো মানুষ হিসাবে সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় মাশরাফি বিন মুর্তজা। দলমত, ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সবাই ভালোবাসেন বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকা এই মানুষটিকে। ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ খ্যাত মাশরাফি রাজনীতিতে নেমেই নড়াইল-২ আসনে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন।
২০১৮ সালের নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয় পেয়েছিলেন তিনি। এরপর এই আসনে আইটি পার্ক, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, স্টেডিয়াম সংস্কার, নতুন সড়ক নির্মাণ ও সংস্কারসহ বেশকিছু উন্নয়ন কাজ করেন। শিগগিরই নড়াইল শহরের মধ্য দিয়ে বহুল প্রত্যাশিত ফোর লেন সড়কের বাস্তবায়ন হবে। এছাড়া নড়াইল শহরের সৌন্দর্যবর্ধনসহ যোগাযোগ, স্বাস্থ্যসেবা, বিনোদন খাতের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ এখনও অব্যাহত আছে। যে কারণে ভোটারদের মধ্যে মাশরাফির ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে।
তবে অভিযোগ রয়েছে, জনগণের মন জয় করতে পারলেও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মন জয় করতে পারেননি তিনি। ফলে অনেক নেতা তার ওপর ক্ষোভ থেকে মনোনয়ন দৌড়ে নেমেছেন। অভিযোগ আছে, নড়াইল-২ আসনে মাশরাফির প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে মনোনয়ন চাওয়ায় জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নিজামউদ্দিন খান নিলু ও তার সমর্থকদের নানাভাবে হেয় করা হচ্ছে। ২৯ নভেম্বর বিকালে নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে ক্ষোভের সঙ্গে এমন অভিযোগ করেছেন নিজামউদ্দিন খান। তিনি আরও বলেন, অতীতে অনেক পক্ষ মনোনয়ন নিয়ে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হলেও মনোনয়ন পাওয়ার পর সবাই মিলে যায়। এবার দেখছি উলটো ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার কথা চিন্তা করে আমাদের হেয় করা হচ্ছে। মনে হচ্ছে আমাদের আর লাগবে না। নিজামউদ্দিন খান আরও অভিযোগ করেন, মাশরাফি মনোনয়ন পাওয়ায় তার আনন্দ মিছিল থেকে তার সমর্থক এমনকি তার বাড়ির সামনে পটকা ফুটিয়ে তাকে হেয় করা হয়েছে। মাশরাফির বাবাও সেখানে ছিলেন বলেও জানান তিনি।
নড়াইল-২ আসনে নির্বাচিত হওয়ার পর মাশরাফি নিয়মিত এলাকায় এসেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে যে কাজ দিয়েছেন তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা করেছেন। মাশরাফি বিভিন্ন মানবিক ও উন্নয়নমূলক কাজের মাধ্যমে এগিয়েছেন দুর্বার গতিতে। গত ৫ বছরে নড়াইলের উন্নয়নের জন্য চেষ্টা করেছেন তিনি।
এদিকে, শেষদিনে মাশরাফি ছাড়াও এই আসন থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির অ্যাডভোকেট শেখ হাফিজুর রহমান (সাবেক সংসদ-সদস্য), জাতীয় পার্টির অ্যাডভোকেট ফায়েকুজ্জামান ফিরোজ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মো. মনিরুল ইসলাম, জাকের পার্টির মো. মিজানুর রহমান মিজান, ইসলামী ঐক্যজোটের মাহাবুবুর রহমান, গণফ্রন্টের মো. লতিফুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফয়জুর আমীর লিটু ও মো. নূর ইসলাম।
বর্তমান এমপি মাশরাফির বাইরে এই আট নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিলেও সব ছাপিয়ে মাশরাফির কাছে সবাই ম্লান। ইতোমধ্যে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই নড়াইলে ‘আনন্দ মিছিল’ তথা ‘আনন্দোল্লাস’ করছেন মাশরাফির পক্ষের নেতাকর্মীরা। যেহেতু ভোটের মাঠে বড় কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই; সে কারণে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া মানেই বিজয়-এমনটাই মনে করছেন মাশরাফির কর্মী-সমর্থকরা।
জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট সুভাস চন্দ্র বোস বলেন, দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড মাশরাফিকে যে নমিনেশন দিয়েছেন তাতে আমরা আনন্দিত, উচ্ছ্বসিত। আমরা আনন্দমুখর পরিবেশে মাশরাফির মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছি।
সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন
জেকেএস/