• ঢাকা শুক্রবার
    ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১

রামেকের সেই শিশুটির পাশে দাঁড়ালেন সৈয়দ আতিক

প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০২১, ১০:১৫ পিএম

রামেকের সেই শিশুটির পাশে দাঁড়ালেন সৈয়দ আতিক

রাজশাহী ব্যুরো

সোমবার সকালে ঘুম থেকে উঠে পত্রিকার পাতা উল্টাতেই চোখ আটকে যায় একটি ছবির দিকে। হাসপাতালের বারান্দায় বাবার মরদেহ নিয়ে বসে আছে সাত বছরের শিশুকন্যা। শিশুটির সামনে স্ট্রেচারে রাখা বাবার নিথর দেহ। বাড়ি থেকে আসা ব্যাগপত্র নিয়ে মেঝেতে বসা সে। কাপড়চোপড়ের সঙ্গে বাবাকে বাতাস করার জন্য হাতপাখাটিও আনতে ভোলেনি। সেটিও আগলে রেখেছে। কিন্তু বাবা আর নেই! দুচোখে ঝরছে পানি। মৃত্যুর সময় বাবার কী তীব্র শ্বাসকষ্ট আর যন্ত্রণা- তা শুধু নীরবেই দেখে গেল ছোট্ট শিশুটি। এমন করুণ দৃশ্য দেখে বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে ওঠে ইন্টারেক্টিভ ডিজিটাল মিডিয়াসিটি নিউজ ঢাকা ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আতিকের। বাবার মরদেহ নিয়ে শিশুকন্যার মনের অজান্তেই দুচোখের কোণ দিয়ে গড়িয়ে পড়ে দুফোঁটা অশ্রু। পত্রিকা হাতে নিয়ে ফোন করেন রিপোর্টার জিয়াউল গনি সেলিমকে। সঙ্গে সঙ্গে মানবিকতার হাত বাড়িয়ে দেন মৃতের পরিবারটির জন্য।

সোমবার (৫ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর পোরশা থানার চক বিষ্ণুপুর গ্রামের ফেরিওয়ালা মুজিবুর রহমান (৪০) সর্দিজ্বর শ্বাসকষ্ট নিয়ে এসেছিলেন  রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তির আগেই জরুরি বিভাগের সামনে মারা যান তিনি। সপ্তাহখানেক আগে সর্দিজ্বর হওয়ায় বাড়িতেই ওষুধ খাচ্ছিলেন। ভেবেছিলেন সেরে যাবে। কিন্তু দিন দিন সমস্যা বাড়তে থাকে। দেখা দেয় শ্বাসকষ্টও। এরপরই এই হাসপাতালে আনা হয়েছিল তাকে। অসুস্থ বাবার সঙ্গে এসেছিল সাত বছরের শিশুকন্যা মরিয়মও। কিন্তু বাবাকে সুস্থ করে আর বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারেনি শিশুটি।

সংবাদটি পড়ে চুপ করে বসে থাকতে পারেননিসিটি নিউজ ঢাকা ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আতিক। তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ভ্যানে ফেরি করে বেড়াতেন মজিবুর রহমান। এতেই স্ত্রী ছেলেমেয়ে নিয়ে কোনো রকমে সংসার চলত। কিন্তু তার মৃত্যুর পর পরিবারটি অনিশ্চয়তায় মুখে। আয়-রোজগারের পথও বন্ধ হয়ে গেছে। ছোট ছোট ছেলেমেয়েকে নিয়ে বিপদে পড়েছেন মা তানজিলা বেগম। এরপরই তিনি সিটি নিউজের নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি হারুন অর রশিদ চৌধুরীকে মুজিবুরের বাড়িতে পাঠান। সেখানে মানবতার ফেরিওয়ালা সৈয়দ আতিকের দেয়া নগদ ২৫ হাজার টাকা মৃত মুজিবুর রহমানে স্ত্রী তানজিলার হাতে দেয়া হয়।

প্রসঙ্গে সিটি নিউজ ঢাকার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আতিক বলেন, ‘সকালে খবরটি পড়েই আমি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ি। বেশি কষ্ট পেলে যেমন মানুষের হৃদয়ে ব্যথা অনুভূত হয়, তেমনি আমার হৃদয়ের মধ্যেও এক ধরনের ব্যথা অনুভব করি। সত্যি বলতে কী, আমার চোখে পানি চলে আসে। তখনই সিদ্ধান্ত নিই, একটা ভালো কাজের মধ্য দিয়ে দিন শুরু করতে চাই। তাৎক্ষণিকভাবে রাজশাহী ব্যুরো প্রধান জিয়াউল গনি সেলিমের সঙ্গে যোগাযোগ করে শিশুটির পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি।

তিনি আরও বলেন, ‘সিটি নিউজ ঢাকা কেবল একটি গণমাধ্যমই নয়, সামাজিক দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে সাধ্যমতো মানুষের পাশে দাঁড়াবে সব সময়ই। আমাদের স্বপ্ন অনেক বড়। আমরা অর্থের অপচয় করব না। সদ্ব্যবহার করব, যাতে মানুষের কল্যাণ হয়। এভাবে সামর্থ্যবানরা অসহায় মানুষের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে আমাদের সমাজ আরও সুন্দর হবে। আরও মানবিক হয়ে উঠবে।

নূর

আর্কাইভ