• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বিএনপি করায় স্বামীকে তালাক দিলেন স্ত্রী

প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২৩, ০২:৫৮ এএম

বিএনপি করায় স্বামীকে তালাক দিলেন স্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

পুলিশ সুপারের একটি সুপারিশপত্র নিয়ে খালি পায়ে থানায় প্রবেশ করেন রহিমা বেগম (৪৩) নামে এক নারী। তার অভিযোগ স্বামী ফরহাদ মিয়ার বিরুদ্ধে। স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, নেশার টাকা না পেয়ে স্বামী প্রায়ই মারধর করেন। এছাড়া তিনি আওয়ামী লীগকে সমর্থন করলেও স্বামী করেন বিএনপি। তাই স্বামীকে তালাকের উকিল নোটিশ দিয়েছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) রাতে রহিমা বেগম সাভার মডেল থানায় বিএনপি সমর্থিত স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে আসেন। সঙ্গে নিয়ে আসেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের সুপারিশপত্র।

ভুক্তভোগী রহিমা বেগম সাভার উপজেলার তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের হেমায়েতপুরের মো. শাহজাহানের মেয়ে। অভিযুক্ত ফরহাদ মিয়া (৫৫) মানিকগঞ্জের সিংগাইর থানার খাসিরচর গ্রামের মৃত মোতালেব মিয়ার ছেলে। বর্তমানে তিনি সাভারের তেঁতুলঝোড়া এলাকায় বসবাস করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রহিমা বেগম আগে সাভারের আড়াপাড়ায় বসবাস করতেন। তখন তিনি পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করতেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আড়াপাড়ার এক বাসিন্দা বলেন, ওই নারী অনেক দিন আগে আড়াপাড়ায় বসবাস করতেন। তখন তিনি পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। এলাকাবাসীর বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি করলে আড়াপাড়া থেকে তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে মানিকগঞ্জের সিংগাইরের ধল্লা এলাকার খাসিরচর গ্রামে স্বামীর বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। সেখানে তিনি বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে ঝগড়া করতেন।

সিংগাইর থানার খাসিরচর এলাকার স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল আলীম সিটি নিউজ ঢাকাকে বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে ওই নারীকে জানি। তিনি সাভারে বসবাস করেন। খাসিরচর এলাকাতেও তিনি ছিলেন। আমি যতদূর জানি ওই নারী একটু বদমেজাজি।

রহিমা বেগম বলেন, আমার স্বামী নেশা করে। নেশার টাকা না পেলে আমাকে মারধর করে। কারও কথা শোনে না। বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। বিএনপির বিভিন্ন মিছিল মিটিং এ যায়। এজন্য আমি তাকে তালাক দিয়েছি।

রহিমা নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দাবি করে বলেন, আমি একজন আওয়ামী লীগ সমর্থিত নারী। একাধিকবার স্বামীকে বুঝিয়েও কোনো কাজ হয়নি, উল্টো নির্যাতন করে। এ ব্যাপারে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ফরহাদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি তার জন্মস্থান মানিকগঞ্জের সিংগাইরের খাসিরচরে খোঁজ নিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

সাধারণ ডায়েরি সূত্রে জানা যায়, রহিমা বেগমকে তার স্বামী বিগত ১০ বছর ধরে নির্যাতন করে আসছেন। দুই মেয়েসহ তাকে কোনো ধরনের ভরণপোষণ দেন না। ভরণপোষণ চাইতে গেলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এসব কারণে স্বামীকে তালাকের উকিল নোটিশ পাঠালে রহিমা বেগমকে তার স্বামী প্রাণনাশের হুমকি দেন।

সাভার মডেল থানার পরিদর্শক দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, রহিমা বেগম তার স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগে সাধারণ ডায়েরি করেছেন।

স্বামী বিএনপি করার কারণে তাকে ডিভোর্স দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাইরে ওই নারী কি বক্তব্য দিয়েছে তা জানি না। তিনি নির্যাতনের জন্য সাধারণ ডায়েরি করেছেন। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাভার মডেল থানার ডিউটি অফিসার সিকদার হারুন অর রশিদ বলেন, রহিমার স্বামী বিএনপি সমর্থিত একজন কর্মী, সেই সঙ্গে মাদক সেবন করে। তিনি থানায় এসে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। এলাকাটি সাভার-ট্যানারি এলাকায় হওয়ায় সেখানকার পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জকে বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

 

সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন

 

জেকেএস/

আর্কাইভ