• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকারি শেষে প্রাকৃতিক নিষেধাজ্ঞায় পড়েছেন জেলেরা

প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২৩, ০৮:১৮ পিএম

সরকারি শেষে প্রাকৃতিক নিষেধাজ্ঞায় পড়েছেন জেলেরা

ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

একটানা দুই মাস পাঁচ দিন মাছ ধরায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ করে সমুদ্রে যাত্রা শুরু করেছিল হাজারো মাছ ধরার ট্রলার। কিন্তু গরিব জেলেদের ভাগ্য অনুকূলে না থাকায় নিষেধাজ্ঞা শেষে পড়তে হলো প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে।

টানা ৬ দিন ঘাটে বসে অলস সময় পার করছেন কুয়াকাটার জেলেরা। বৈরী আবহাওয়ার কারণে বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকায় কয়েক হাজার ফিশিং ট্রলার উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় নিরাপদ আশ্রয়ে সময় কাটাচ্ছে। ফলে ভরা মৌসুমে ইলিশসহ নানা প্রজাতির মাছ ধরা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জেলে ও মহাজনরা হতাশ হয়ে পড়েছেন।

স্থানীয় জেলেরা জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ফিশিং ট্রলারগুলো উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকায় নিরাপদ আশ্রয়ে রেখে জেলেরা অলস সময় পার করছেন। তারা বলেন, ৬৫ দিন নিষেধাজ্ঞা উঠেছে মাত্র ১৫ দিন আগে। পুরো জেলেপল্লিগুলো বুক ভরা আশা নিয়ে অপেক্ষায় ছিল নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার। কিন্তু হঠাৎ সমুদ্রে বৈরী আবহাওয়ায় সব স্বপ্ন মাটি করে দিল। আবার কখন মাছ শিকারে যেতে পারবে সেই প্রত্যাশায় প্রহর গুণছে জেলেরা।

dhakapost

আলিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের মৎস্য ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ফাহাদ, রাসেল মোল্লা, আবুল কোম্পানিসহ আরও কয়েকজন জেলেদের বলেন, আমরা মাছের উপর নির্ভরশীল। মাছ কেনাবেচা করে চলে আমাদের সংসার। কখন সিগন্যাল কমে যাবে কখন জেলেরা মাছ ধরতে যাবে সেই অপেক্ষায় আছি।

গত ২২ জুলাই শেষ হয়েছে সাগরে মাছ ধরায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ায় সাগর উত্তাল থাকায় মাছ ধরতে যাওয়া অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে জেলেদের। তাই ৬৫ দিনের অবরোধে অনাহারে অর্ধাহারে থাকা এসব জেলে পরিবারের মুখের হাসি অনেকটা ম্লান। গত কয়েকদিন উপকূলে বসবাসরত কয়েক হাজার জেলে অলস সময় পার করছেন।

কুয়াকাটা-আলিপুর মৎস্য মালিক সমিতির সভাপতি আনসার উদ্দিন মোল্লা সিটি নিউজ ঢাকাকে বলেন, ৬৫ দিনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শেষ হতে না হতেই আমরা এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে পড়েছি।আমাদের শত শত ট্রলার বন্দরে বাজার এবং বরফ নিয়ে বসে আছে, সবাই অপেক্ষায় আছে একটু আবহাওয়া ভালো হলেই সাগরে চলে যাবে। কিন্তু বৈরী আবহাওয়া যদি না কাটে তাহলে হাজারো জেলে পরিবারের না খেয়ে থাকতে হবে।

জানা যায়, বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার হাজারো ছোট-বড় ট্রলার রয়েছে। মৌসুম শুরু হলে পর্যায়ক্রমে ট্রলার নিয়ে সাগরে নামতে থাকেন জেলেরা। কিন্তু সাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হলে জেলা মৎস্য অফিস থেকে তাদের সতর্ক করা হয়। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া নিষেধ করা হয়। এরপরেও যারা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মাছ ধরতে যায় তাদের অনেকে ঝড়ের কবলে পড়ে সর্বশান্ত হয়ে যায়। এমনকি ঢেউয়ের আঘাতে অনেকের জাল হারিয়ে যায়, ট্রলার সাগরে ডুবে যায়। ফলে কোটি টাকার লোকসানে পড়তে হয় জেলে ও মহাজনদের।

সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা সিটি নিউজ ঢাকাকে বলেন, সাগরে প্রচণ্ড ঢেউয়ের কারণে সাগরে জাল ফেলতে পারছে না জেলেরা। হাজারো মাছ ধরা ট্রলার উপকূল এলাকায় নোঙর করা রয়েছে। আগে জীবনের নিরাপত্তা। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পরে  কিছুদিন মাছ ধরা গেলেও এখন পুরোপুরি সাগরে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে খুব কষ্টে দিন যাচ্ছে জেলেদের। যারা সিগন্যাল না মেনে সাগরে যাচ্ছে হয়তো তাদের ঢেউয়ের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তবে এ পর্যন্ত তেমন কোন দুঃসংবাদ পাইনি আমরা । আমাদের পক্ষে করনীয় যা করার আমরা তাই করছি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের কিছু সীমাবদ্ধ রয়েছে। আমরা কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশের লোকজন যারা আছে তাদেরকে অবহিত করি। কোন বোট আটকে গেলে আমরা তাদেরকে উদ্ধার করাই আমাদের কাজ। তবুও আমাদের কোস্টগার্ড নৌ পুলিশের লোকজনের সহযোগিতা নিতে হয়।

 

সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন

 

জেকেএস/

আর্কাইভ