• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

হেঁটে অফিস করেন পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম, নেই নিরাপত্তা কর্মী

প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০২৩, ০২:১০ এএম

হেঁটে অফিস করেন পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম, নেই নিরাপত্তা কর্মী

ছবি: সিটি নিউজ ঢাকা

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

পৌরসভার মেয়র তিনি। কিন্তু সমসাময়িক অন্য মেয়র থেকে আলাদা। বর্তমান সময়ের সঙ্গে ঠিক মানানসই নয়। বরং মনে পড়ে যায় খলিফাদের আমলের কথা। এটা ঠিক যে, রাতের অন্ধকারে তিনি গোপনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রজাদের খোঁজখবর নেন না। আবার অন্য মেয়রদের মতো আলিশান ব্যবস্থাও তার নয়। বরং বাড়ি থেকে কখনও পায়ে হেঁটে আবার কখনও সাধারন যাত্রীদের সঙ্গে ভ্যানে করে পৌর সভায় অফিস করেন জীবননগর পৌর সভার মেয়র মোঃ রফিকুল ইসলাম। সঙ্গে রাখেন না কোনো নিরাপত্তা কর্মী।

নিয়মিত তিনি জনগণের খোঁজখবর নেন। সে জন্যই তার হেঁটে বা ভ্যানে অফিসে যাওয়া। মঙ্গলবার সকাল ৮টার সময় জীবননগর পৌর সভার ৭নং ওয়ার্ডে অবস্থিত নিজ বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে পৌর সভার যাওয়ার উদ্দ্যেশ্যে বের হন মেয়র। প্রথমে নিজ বাড়ির আশে পাশের মানুষের সাথে কুশল বিনিময় করেন এবং তাদের সুবিধা, অসুবিধার কথাগুলো মনোযোগ সহকারে শোনেন। শহর পরিস্কার পরিছন্ন হয়েছে কি না সে ব্যাপারে  খোঁজখবর নেন। এমনই দৃশ্য ধরা পড়ে সিটি নিউজ ঢাকার ক্যামেরায়।

প্রায় ৪০ বছর ধরে জীবননগর পৌরবাসীর সেবা করে  দক্ষতার পরিচয় দিয়ে চলেছেন মেয়র মোঃ রফিকুল ইসলাম। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভানেন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনায় সাধারন জনগনের খেদমত করে যাচ্ছেন। তুলে ধরছেন বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের কথা । পৌর সভাটাকে সাধারন জনগনের জন্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তুলেছেন। একজন সফল ব্যবসায়ীর পাশাপাশি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একজন সফল জনসেবক হিসেবে । বাংলাদেশে এই প্রথম কোন মেয়র পায়ে হেঁটে অফিস করেন ।

জীবননগর  পৌর শহরের ফল ব্যবসায়ী আফজাল হোসেন বলেন, জীবননগর পৌর সভার মেয়র এত ভালো মনের মানুষ তা বলে কাউকে বোঝানো যাবে না। প্রতিদিন হেঁটে অফিসে যান। এ সময় দোকানদারদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। এটা আমাদের সব চেয়ে বড় পাওয়া। আমরা তার সাথে আমাদের সুবিধা, অসুবিধার কথাগুলো বলতে পারি।

পৌর শহরের ভ্যান চালক হারুন মন্ডল বলেন, পৌর মেয়র রফিকুল একজন সাদা মনের মানুষ। তিনি আমাদের সাথে বসে আড্ডা দেন এবং আমরা তার কাছে আমাদের সমস্যর কথা বললে তিনি তা সমাধান করে দেন। তাছাড়া তার অফিসে গেলে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় না। তিনি আমাদের সম্মান করে।

জীবননগর পৌর সভার কাউন্সিলার মোঃ জামাল হোসেন খোকন বলেন, জীবননগর পৌর সভার মেয়র প্রতিদিন সন্ধার পর ভ্যানে করে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরে বেড়ান এবং পৌরবাসীর খোঁজখবর রাখেন। তিনি চাইলে বিলাসিতায় জীবন-যাপন করতে পারেন কিন্তু তিনি কখনও বিলাসিতায় চলেন না। অফিস করেন পায়ে হেঁটে, সাধারন পোশাক পরেন ,তার মনে কোন অহংকার নেই। নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যবসা করেন। আমার মনে হয় জীবননগর পৌর সভার মেয়র মোঃ রফিকুল ইসলামের মত এমন জীবন-যাপন আর কোন মেয়র করেন না।

এখানেই শেষ নয়; রাজনীতির মাঠে আগে থেকেই তিনি জোরালো ভূমিকায় ছিলেন। ১৯৯৯সালে ৭নং ওয়ার্ডে পৌর কাউন্সিলার হিসাবে নির্বাচিত হন। তারপর টানা তিনবার পৌর কাউন্সিলার হন মোঃ রফিকুল ইসলাম। সর্বশেষ জীবননগর পৌর সভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে  বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। মেয়র হয়েও বদলাননি মোঃ রফিকুল ইসলাম।  মেয়রের পায়ে হেঁটে অফিসে যাওয়ার ছবি সোস্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া সেই ছবিতে দেখা যায়, নিজ বাড়ি থেকে তিনি হেঁটে অফিসে যাচ্ছেন এবং সাধারন মানুষের সাথে কুশল বিনিময় করছেন।

জীবননগর পৌর সভার মেয়র মোঃ রফিকুল ইসলাম সিটি নিউজ ঢাকাকে বলেন, আমাকে জনগন ভোট দিয়ে নির্বাচন করেছে তাদের খেদমত করার জন্য। আমি চাইলে গাড়িতে চলাফেরা করতে পারি। তখন সাধারন জনগন আমাকে অহংকারী মনে করবে। তারা আমার সাথে কথা বলতে চাইবে না। এ জন্য আমি গাড়ি ছাড়াই চলাচল করি যাতে সবার সাথে কুশল বিনিময় করতে পারি এবং জনগনের চাওয়া পাওয়ার কথাগুলো শুনতে পারি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের উন্নয়নের জন্য যেভাবে দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন তা বলে শেষ করা যাবে না । সেখানে আমি একজন মাঠ কর্মী হিসেবে জনগনের জন্য কাজ না করলে হবে? যতদিন বেঁচে আছি এভাবেই মানুষের সেবা করে যাব।

আর্কাইভ