প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৩, ০৫:৫৩ পিএম
সাভারের আশুলিয়ায় সমিতি খুলে সাধারণ শ্রমিকের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি চক্রের বিরুদ্ধে। নিউ শেফালী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কো-অপারেটিভ লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠান খুলে গ্রাহকদের প্রায় ৪ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় চক্রটি। পালিয়ে যাওয়ার ৮ মাস অতিবাহিত হলেও কোনো উপায় পায়নি গ্রাহকেরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আশুলিয়ার বাইপাইলের বুড়িরবাজারের নতুনপাড়া এলাকার ওই সমিতির সভাপতি চিন্ময় কান্তি সিংহ (৫৫), সাধারণ সম্পাদক জ্যোতিন্ময় কান্তি সিংহ (৪২), কালেক্টর আবু বকর (২৮), প্রান্ত সিংহ (২২) ও পরিচালক তপসী সংহ (৪৫) মিলে ওই এলাকায় নিউ শেফালী ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী কো-অপারেটিভ লিমিটেড নামের একটি সমবায় সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন। এতে স্থানীয় পোশাক শ্রমিকদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে সঞ্চয়ী হিসাব খুলে দেন। লাভের আশায় সঞ্চয়ী ছাড়াও এককালীন টাকা জমা রাখেন অনেকেই। কিন্তু গত বছরের ১৫ নভেম্বর গ্রাহকদের সঞ্চিত প্রায় ৪ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। অভিযুক্তরা বর্তমানে পালতক রয়েছে।
ভুক্তভোগীরা জানায়, গত বছরের ১৫ নভেম্বর নিউ শেফালী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কো-অপারেটিভ লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানটির কর্তাব্যাক্তিরা পালিয়ে যান। পরে সমিতির অফিসের সামনে শতাধিক গ্রাহক জড়ো হয়ে হইচই করে। এরপর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু এখনও কোনো আশার আলো দেখেননি তারা।
ভুক্তভোগী গ্রাহক ওমর ফারুক হাসান বলেন, ২০২০ সালের ১৩ মার্চ ওই সমিতিতে সঞ্চয়ী হিসাব খুলে প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা সঞ্চয় করতে থাকি। এছাড়া প্রতিদিন ৫০০ ও এককালীন ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা জমা করি। বর্তমানে আমি নিউ শেফালী ক্ষুদ্র সমবায় কো-অপারেটিভ লিমিটেডের কাছ থেকে সর্বমোট ২২ লাখ ৮২ হাজার ৫০০ টাকা পাই। আমার মতো এরকম আরও শতাধিক গ্রাহক রয়েছেন। তাদের সব টাকা নিয়ে চক্রটি পালিয়ে যায়। এরপর আমি নিজেই বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করি। কিন্তু এখনও আমরা টাকাও ফেরত পেলাম না। বিষয়টি সমাধানের অপেক্ষায় প্রায় ৮ মাস কেটে গেছে। আমি আমার টাকা ফেরত চাই।
হাবিবুর রহমান নামের অপর ভুক্তভোগী বলেন, আমার জীবনের সব আয় আমি শেফালীতে জমিয়ে রেখেছিলাম। আজ আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমার টাকাগুলো না পেলে সন্তানদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে যাবে। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এ টাকা না পেলে আমাকে অন্যদের কাছে হাত পাততে হবে। শুধু আমি নই আমার মতো আরও প্রায় দেড় হাজার গ্রাহক পথের ভিখারি হয়ে যাবে।
এ ব্যাপার আশুলিয়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুর খান বলেন, এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে।অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সাভার উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন বলেন, এ ঘটনা ঘটেছে আমি এখানে জয়েন করার আগে। আমি এসে পাইনি, তবে এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে।
বিএস/