• ঢাকা বুধবার
    ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১

স্বামীর মুখ না দেখেই বিধবা মরিয়ম

প্রকাশিত: জুলাই ১৬, ২০২৩, ০৮:০৮ পিএম

স্বামীর মুখ না দেখেই বিধবা মরিয়ম

ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী ব্যুরো

সাত বছর আগে প্রবাসে পাড়ি জমান রুবেল হোসাইন। নয় মাস ছয় দিন আগে মুঠোফোনে বিয়ে হয় প্রেমের সম্পর্কে থাকা রুবেল হোসাইন ও মরিয়ম আক্তারের। কিন্তু রুবেলের সঙ্গে আর সংসার করা হলো না মরিয়মের।

হঠাৎ প্রবাসী স্বামীর মৃত্যুর খবরে যেন আকাশ ভেঙে পড়ে কলেজছাত্রী মরিয়ম আক্তারের। আহাজারি করা মরিয়মকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা পাচ্ছেন না স্বজনরা। রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বারইপাড়া গ্রামে স্বামী রুবেলের বাড়িতে মুঠোফোনে স্বামীর ছবি দেখে প্রলাপ করছিলেন মরিয়ম আক্তার।

প্রলাপ করতে করতে মরিয়ম আক্তার বলেন, ‘আপনাদের পায়ে ধরি, আমার স্বামীক একনা এনে দেনরে ভাই। আমার স্বামীক কোন দিন চোখের কাছ থেকে দেখিনি।’

মরিয়ম জানান, গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে শেষ কথা হয়েছিল। দেশে আসার জন্য শুক্রবার কাগজপত্র জমা দেওয়ার কথা ছিল। শুক্রবার রাতে আবার কথা বলবে বলেছিল। রাতে কলও দিয়েছিলেন মরিয়ম। কিন্তু কেউ রিসিভ করেনি। শনিবার সকাল ৮টার দিকে রুবেলের প্রবাসী বড় ভাই ফোনে জানান ফার্নিচারের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে রুবেল মারা গেছে।

জানা গেছে, তিন ভাইয়ের মধ্যে রুবেল সবার ছোট। ২০১৬ সালে সৌদি আরব পাড়ি জমান রুবেল। তার বড় দুই ভাই আগে থেকেই প্রবাসী। বড় ভাই সৌদি আরব এবং মেজো ভাই দুবাই থাকেন।

এ বিষয়ে বাগমারা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত চলতি দায়িত্ব) সুমন চৌধুরী বলেন, জেলা প্রশাসক বাগমারায় এসে পরিবারগুলোর সাঙ্গে কথা বলেছেন। তাদেরকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করা হয়েছে। এছাড়া মরদেহ আনার জন্য ফরম পূরণ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হয়। সে কাজটি আমরা দ্রুততার সঙ্গে করছি। এক্ষেত্রে যত সহযোগিতা দেওয়ার প্রয়োজন আমরা দেব।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় সৌদি আরবের দাম্মামে ফার্নিচারের কারখানায় আগুনে আটজন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বারইপাড়ার জফির উদ্দিনের ছেলে রুবেল হোসাইন, একই এলাকার জমিরের ছেলে মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম, শাহাদাত হোসাইনের ছেলে মো. আরিফ, বাগমারার বড় মাধাইমুরির আনিসুর রহমান সরদারের ছেলে ফিরুজ আলী সরদার, নওগাঁর আত্রাই উপজেলার উদয়পুরের মন্ডল পাড়ার মৃত রহমান সরদারের ছেলে বারেক সরদার (৪৫), একই উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের ঝনঝনিয়া গ্রামের মৃত আজিজার প্রামাণিকের ছেলে রমজান আলী (৩৩) ও  নাটোরের নলডাঙ্গার খাজুরা ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের মৃত দবির উদ্দিনের ছেলে ওবায়দুল হক (৩৩)। তাদের মরদেহ হুফুফ কিং ফাহাদ মর্গে  রাখা আছে।

 

জেকেএস/

দেশজুড়ে সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ