প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২৩, ০২:৪৯ এএম
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগকে খুঁজে পাওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘২০১১ সালে কারচুপি, ২০১৮ সালে সবাইকে বোকা বানিয়ে রাতের ভোট, বিচারপতি খায়রুল হকের ওপর জোর-চাপ দিয়ে পার্লামেন্টে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিধান বাতিল করে দেয়। কেন, আবার দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। কারণ তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকলে, নিরপেক্ষ সরকার থাকলে, নির্দলীয় সরকার থাকলে আওয়ামী লীগের ভাত নেই। ৩০টি আসনও পাবে না।’
শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে নোয়াখালী শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পদযাত্রা পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে পদযাত্রায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন।
আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, ‘তারা বলে নির্বাচন আমাদের অধীনে হবে। আমরাই ভোট কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ করব। আমরাই ভোট দেওয়াব, আমাদের মতো করে সবাইকে ভোট দিতে হবে। নইলে চলে যেতে হবে বলে হুমকি। এমনকি আমাদের ভোটারদের এখনো বলে ভোট কাকে দিবা। যদি বিএনপিকে ভোট দিতে চাও তাহলে তোমার ভোট হয়ে গেছে। ভোটকেন্দ্রে যেতেই দেয় না।’
শেখ হাসিনার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘২০২১ সালে শেখ হাসিনা আমাদের ডেকে বলেন নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে সবাই ভোট করতে পারবেন। সবাইকে বলেন ভোট করতে আমি কোনো বাধা দেব না। আমরা ভাবলাম বোধহয় শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে। কি করা যাবে বলেন। আগের রাতে ভোট হয়ে গেল। এখন আবার বলছেন আমরা সুন্দর ভোট করব। আমাদের অধীনেই ভোট হবে। ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন হবে। আহারে কী আবদার। শিয়ালের কাছে বারবার কুমিরের বাচ্চা দেওয়া যাবে না। বারবারই খেয়ে ফেলবে। আমরা এবার আর খেতে দেব না।’
আওয়ামী লীগকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আর কোনো সময় নেই, তাদের সময় শেষ। আমি পরিষ্কারভাবে বলেছি। আবারো বলছি, ভালো ছেলের মতো সুবোধ বালক-বালিকার মতো পদত্যাগ করেন, সংসদ ভেঙে দেন। যদি ভালোয় ভালোয় পদত্যাগ করেন তাহলে তো ভালো। তা না হলে ফয়সালা হবে রাজপথে।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আট বছর কারাগারে রাখা হয়েছে। তিনি গণতন্ত্রের জন্য আপসহীন সংগ্রাম করেছেন। আমরা নির্বাচিত হলে রাষ্ট্র মেরামতের জন্য ৩১ দফা দিয়েছি। আমাদের নেতা তারেক রহমান এই ৩১ দফা দিয়ে আমাদের একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছেন।’
পদযাত্রায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম প্রমুখ।
এ সময় নোয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান, নোয়াখালী জেলা যুবদলের সভাপতি মনজুরুল আজম সুমন, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান, জেলা বিএনপির সদস্য মো. গোলাম মোমিত ফয়সাল, জেলা শ্রমিক দলের সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিনসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির সহযোগী সংগঠন কৃষক দল, শ্রমিক দল, মৎস্যজীবী দল, তাঁতীদল ও জাসাসের উদ্যোগে এই পদযাত্রার আয়োজন করা হয়। এ পদযাত্রায় বৃহত্তর নোয়াখালীর পাঁচটি জেলার নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
বিএস/