• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

কলেজের ফেসবুক পেজে পর্নোগ্রাফি, থানায় ডায়েরি

প্রকাশিত: জুলাই ৩, ২০২৩, ০৭:১০ পিএম

কলেজের ফেসবুক পেজে পর্নোগ্রাফি, থানায় ডায়েরি

ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার মিরপুরের আমলা সরকারি কলেজের নামে পরিচালিত ফেসবুক পেজে শতাধিক পর্নোগ্রাফি ভিডিও ও ছবি প্রকাশিত হয়েছে। পেজটি পরিচালনা করতো প্রতিষ্ঠানটির সকল শিক্ষক ও কম্পিউটার অপারেটর। পর্নোগ্রাফি ভিডিও ও ছবি প্রকাশিত হবার ১২ দিন পর থানায় সাধারণ ডায়েরি করল প্রতিষ্ঠানটি ।

২১ জুন রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে প্রথম পর্নোগ্রাফির একটি ভিডিও পোস্ট হয় পেজটি থেকে । এরপর ১২ দিনে প্রায় ১৫০ টি পর্নোগ্রাফি ভিডিও ও ছবি প্রকাশ পায় পেজটি থেকে ।

এমন পরিস্থিতে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক শিক্ষার্থী অভিভাবকেরা চরম বিব্রত ও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। সমাধানে মিরপুর থানায় সাধারণ ডায়েরিসহ পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সাহায্য চেয়েও ব্যর্থ হয়েছেন বলে অভিযোগ কলেজের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের।

জানা যায়, আমলা সরকারী কলেজ, মিরপুর, কুষ্টিয়া’ নামে ফেসবুক আইডিটি খুলে দেন কলেজের কম্পিউটার অপারেটর সোহাগ আলী। তিনি বলেন, ‘করোনাকালীন সময়ে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর জন্য স্যারদের অনুরোধে এই আইডিটি খোলা হয়েছিল। সেই থেকে কলেজের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবরকম তথ্য উপাত্তের বিনিময় হয় আইডিটিতে। হঠাৎ গত ২৮ মে কে বা কারা আইডিটি হ্যাক করে সেখানে অশ্লীল পর্ন ভিডিও ছবি পোস্ট দিতে থাকে। বিষয়টি নজরে আসার পর তাৎক্ষণিক ভাবে কলেজ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মতে মিরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়’। কিন্তু অদ্যাবধি কোন সুরাহা হয়নি। এদিকে হ্যাকাররা প্রতিনিয়ত এই আইডিতে পর্ন ভিডিও পোস্ট করে যাচ্ছে’।

কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া সুলতানার অভিযোগ, ‘পড়ালেখা সংক্রান্ত নানা ধরনের তথ্য ও কনটেন্ট এই পেজ থেকে পেয়ে থাকি। কিন্তু হঠাৎ করেই পেজটিতে আপত্তিকর অশ্লীল ভিডিও-ছবি চলে আসছে। এতে করে আমরা সবাই খুব বিব্রত হচ্ছি।’ দ্রুত এর একটা সমাধান করে এর সাথে জড়িতদের শাস্তি দেওয়া হোক’।

বিষয়টির আইনগত মনিটরিং করছেন কলেজের শারীরিক শিক্ষা বিভাগের শিক্ষক এ্যাড. শামীম সোহাগ। তিনি বলেন, ‘মিরপুর থানা পুলিশ এই সমস্যার প্রযুক্তিগত সমাধানের সক্ষমতা না থাকায় কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের এক্সপার্টদের শরণাপন্ন হই। গত জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে। তারা দিনভর আমাকে বসিয়ে রেখে চেষ্টা করেও কোন সমাধান করতে পারেনি বলে অভিযোগ এই শিক্ষকের’।

আইডিটির এ্যাডমিন আমলা সরকারী কলেজের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক হাফিজুর রহমানের অভিযোগ, ‘উদ্ভুত সমস্যার পরিত্রাণ পেতে পুলিশের কাছে গিয়েও কোন সমাধান দিতে পারেনি বা সমাধানযোগ্য সম্ভাব্য কোন পরামর্শও পায়নি পুলিশের কাছে’। সর্বশেষ বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে জানতে পারি, বিষয়টির রেগুলেটিং অথোরিটি বিটিআরসি। তাই শেষ পর্যন্ত আমরা বিটিআরসিকে সামাধানের অনুরোধ করে পত্র দিয়েছি। বিটিআরসি দুই একদিনের মধ্যেই এর সমাধান করে দেবেন বলে আমাদের জানিয়েছে’।

আমলা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. বাদশা জাহাঙ্গীর বলেন, ,হ্যাক হওয়ার বিষয়টি জানার পর মিরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। পরে কুষ্টিয়া পুলিশের ক্রাইম ইউনিটের সঙ্গে যোগযোগ করেও এখন পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে অনবরত ফোন কল ফেস করতে হচ্ছে। এতে কলেজেরও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে’।

মিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পুলিশ পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কলেজ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে। বিষয়টি পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

 

জেকেএস/

আর্কাইভ