• ঢাকা রবিবার
    ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

শাশুড়িকে শ্বাসরোধে হত্যা: পুত্রবধূ ও তার প্রেমিকের যাবজ্জীবন

প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০২৩, ১১:২৫ পিএম

শাশুড়িকে শ্বাসরোধে হত্যা: পুত্রবধূ ও তার প্রেমিকের যাবজ্জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে শাশুড়ি রাহেমা বেগমকে (৬৫) বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে গৃহবধূ তাহমিনা আক্তার ও তার পরকীয়া প্রেমিক জসিম উদ্দিনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়।

সোমবার (১৯ জুন) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।

জামিন নিয়ে পলাতক থাকায় রায়ের সময় দণ্ডপ্রাপ্ত তাহমিনা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। তবে অপর দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তার প্রেমিক জসিম উদ্দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

তাহমিনা রামগঞ্জ উপজেলার সাউদেরখিল গ্রামের মফিজুল ইসলামের মেয়ে এবং একই উপজেলার রাঘবপুর গ্রামের কবির হোসেনের স্ত্রী। এ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত জসিম রাঘবপুর গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে এবং কবির হোসেনের চাচাতো ভাই।

আদালত ও মামলা সূত্র জানায়,  তাহমিনা আক্তারের সঙ্গে রাঘবপুর গ্রামের মসজিদ ওয়ালা নোয়া বাড়ির মো. আবু তাহেরের ছেলে দুবাই প্রবাসী কবির হোসেনের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর প্রবাসী কবির তার স্ত্রীকে বাড়িতে রেখে দুবাই চলে যায়।

শ্বশুর আবু তাহের ব্যবসার জন্য ঢাকায় থাকতেন। বাড়িতে তাহমিনা ও তার শাশুড়ি রাহেমা বেগম বসবাস করতেন। তাহমিনার স্বামী বিদেশ থাকার সুবাদে তিনি চাচাতো ভাসুর জসিম উদ্দিনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।

২০২১ সালের ২২ এপ্রিল রাত ৯ টার দিকে তাহমিনাকে জসিমের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় তার শাশুড়ি রাহেমা দেখে ফেলেন। এরপর তারা দুইজন মিলে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে।


ওইরাতে রাহেমা বেগমের মুখে বালিশ চাপা দেয় জমিস আর তাহমিনা তার দুই পা চেপে ধরে। এতে রাহেমার মৃত্যু হয়। ঘটনার পর জসিম পালিয়ে যায়। তাহমিনা ভেতর থেকে ঘরের দরজা বন্ধ করে রাখে।

আশেপাশের লোকজন ঘটনাটি টের পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য ফয়েজ আহমদকে খবর দেয়। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ রাহিমা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে এবং পুত্রবধূ তাহমিনাকে আটক করে।

এ ঘটনায় তাহমিনার শ্বশুর মো. আবু তাহের (৭৭) বাদী হয়ে পুত্রবধূ তাহমিনাকে আসামি করে রামগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।

তাহমিনা ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। এতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ভাসুর জসিম উদ্দিনের নামও প্রকাশ করেন। পরে ২৭ এপ্রিল পুলিশ জসিমকে গ্রেফতার করে।

হত্যা মামলাটি তদন্ত করে ২০২২ সালের ২৭ এপ্রিল আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন রামগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবদুল বারী মৃধা। এতে হত্যার দায়ে তাহমিনা এবং জসিম উদ্দিনকে অভিযুক্ত করা হয়।

দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত সোমবার এ রায় দেন।

লক্ষ্মীপুর জজ আদালতে সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, হত্যা মামলায় গৃহবধূ তাহমিনা জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছেন।


এডিএস/

দেশজুড়ে সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ