• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণ, ৮ বছর পর ভাড়া পরিশোধ

প্রকাশিত: জুন ১০, ২০২৩, ০৭:১৬ পিএম

বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণ, ৮ বছর পর ভাড়া পরিশোধ

ছবি: সংগৃহীত

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট না পেয়েও উঠে পড়েন হায়াত আলী। ঢাকা থেকে রাত ১১টায় ছেড়ে আসা ট্রেনে ভাগ্যক্রমে একটি সিটও পেয়ে যান। এরপর টিটিই এলেও তিনি ঘুমিয়ে থাকায় তার টিকিট আছে কিনা না দেখেই চলে যান। ঘুম ভেঙে হায়াত আলী দেখেন গন্তব্যস্থল রাজশাহী পৌঁছে গেছেন, তাই নেমে যান ট্রেন থেকে।

ঘটনাটি ৮ বছর আগের হলেও, এমন ঘটনা হরহামেশাই হয়ে থাকে। তবে এবার ঘটেছে ব্যতিক্রম ঘটনা। ট্রেন ভ্রমণের দীর্ঘ ৮ বছর পর সেই টিকিটের টাকা পরিশোধ করলেন প্রবাসী হায়াত আলী (২৮)। বুধবার (৭ জুন) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশনে গিয়ে টিকিটের টাকা দেন তিনি। 

জানা যায়, হায়াত আলী চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার মোহনপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে। বিদেশে যাওয়ার জন্য একটি ইন্টারভিউ দিতে ঢাকায় গেছিলেন হায়াত। ফেরার পথে টিকিট না কেটেই ট্রেনে ভ্রমণ করেন। সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন তিনি। টাকা না দিয়ে ভ্রমণ করার অনুশোচনা থেকেই ৮ বছর পর টিকিট কেটে দায়মুক্ত হতেই ছুটে যান রেলস্টেশনে। এসময় 
টিকিট মূল্য ৩৪০ টাকা তুলে দেন টিকিট মাস্টারের হাতে। দায়মুক্ত হতে পেরে এখন খুশি হায়াত আলী। 

এ বিষয়ে হায়াত আলী বলেন, আগে কাঠমিস্ত্রীর কাজ করতাম। ৮ বছর আগে বিদেশ যেতে ঢাকায় ইন্টারভিউ দিতে যাই। টিকিট পায়নি তবুও ট্রেনে উঠে পড়ি। ভেবেছিলাম ট্রেনে ওঠার পর  টিকিট কেটে নেব। কিন্তু সিট পেয়ে ঘুম চলে আসে। এর মধ্যে কখন টিটিই এসে চলে যায় বুঝতে পারিনি। ঘুম ভেঙে দেখি রাজশাহী চলে এসেছি। পরে দেব দেব করে টাকাটা আর পরিশোধ করা হয়নি। 

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি কাতার থেকে দেশে ফিরেছি। এসেই ভাবলাম বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণ করে এতে দীর্ঘ সময় পার করে দেওয়া উচিত হয়নি। তাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশনে এসে এখানকার সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি খুলে বলি। এরপর তাদের সহযোগিতায় ৩৪০ টাকার একটি টিকিট কেটেছি। এখন ভালো লাগছে। নিজেকে দায়মুক্ত করতে পেরেছি। সকলের উচিত, ট্রেনে টিকিট কেটে ভ্রমণ করা। 

রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী-আরএনবি‍‍`র চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশনের ইনচার্জ মো. হেলেন হোসেন জানান, স্টেশনে এসে এক যাত্রী আমাদেরকে জানান, সে ৮ বছর আগে ঢাকা থেকে রাজশাহী রুটে বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণ করেছেন। এখন সেই টিকিট কাটতে চান। পরে স্টেশন মাস্টারের সঙ্গে কথা বলে তার টাকা পরিশোধের ব্যবস্থা করা হয়। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. ওবাইদুল্লাহ বলেন, এমন ঘটনা খুবই বিরল। যা সচারাচর দেখা যায় না। অনেকদিন আগে ট্রেন ভ্রমণ করার পরেও তা পরিশোধ বা টিকিট সংগ্রহ করার ঘটনা বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণকারী যাত্রীদের জন্য শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে। হায়াত আলী আমাদের সমাজের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার বলার পরই আমরা তার দেওয়া ঢাকা-রাজশাহীর একটি টিকিটের মূল্য রাজস্ব খাতে জমা করেছি।

 

জেকেএস/
 

আর্কাইভ