• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বেরিয়ে এলো শিশু অপহরণের অভিনব পদ্ধতি, আটক ৩

প্রকাশিত: মে ৬, ২০২৩, ১০:২০ পিএম

বেরিয়ে এলো শিশু অপহরণের অভিনব পদ্ধতি, আটক ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

শুধু একটি মোবাইল নম্বর দিয়েই শিশু অপহরণ করে একটি চক্র। শারীরিক কিংবা মানসিক কোনো ধরনের নির্যাতন না করেই অভিনব কায়দায় আদায় করা হয় মুক্তিপণের টাকা। আর এ কাজে চক্রটি সময় নেয় মাত্র দুই থেকে তিন ঘণ্টা। পুলিশের জালে চক্রের মূল হোতাসহ ৩ জন গ্রেফতারের পর বেরিয়ে আসে শিশু অপহরণের অভিনব পদ্ধতি।

শনিবার (৬ মে) সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মোরশেদ আলম।

তিনি বলেন, অপহরণকারীরা প্রথমে শিশুদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করে। তারপর শিশুরা মোটিভেটেড হয়ে অপহরণকারীরা যা বলে তাই করে। জোরপূর্বক তারা কিছু করে না। সাধারণত ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে চাঁদা দাবি করে। মা-বাবা ভয়ে তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী টাকা দেয়। এর কিছুক্ষণ পরেই দেখা যায় যে শিশুটি আবার ফেরত চলে আসছে।

সিসিটিভি একটি ফুটেজে দেখা যায়, অপহরণকারী চক্রের মূলহোতা মিল্টন মাসুদের পেছনে স্বাভাবিকভাবেই হেটে যাচ্ছে একটি শিশু। সাধারণ চোখে স্বাভাবিক দৃশ্য মনে হলেও মূলত শিশুটিকে অপহরণ করে নেয়া হয় নির্দিষ্ট স্থানে।
 
পুলিশ বলছে, সাধারণত ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের টার্গেট করে থাকে চক্রটি। পরিবারের নানা তথ্য দিয়ে শিশুর কাছ থেকে বাবা-মায়ের মোবাইল নম্বর নেয়া হয়। তাৎক্ষনিকভাবে শিশুর সঙ্গে ভালো ব্যবহার, খাবারের লোভসহ বাবা টাকা পাবে এমন নানা তথ্য দিয়ে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের পর টার্গেটকে নেয়া হয় নিরাপদ স্থানে। শিশুকে আড়ালে রেখেই অভিভাবকের সঙ্গে চলে নানা হুমকিসহ মুক্তিপণের দেনদরবার। সম্প্রতি রাজধানী উত্তরায় দুই শিশু অপহণের শিকার হলে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয় চক্রের মূলহোতাসহ তিনজনকে।

স্কুল, বাজার নানা জায়গায় একা থাকা শিশুদের টার্গেট করে চক্রটি। পুলিশের দাবি, এখন পর্যন্ত চক্রটি প্রায় আড়াইশজন শিশুকে অপহরণ পরবর্তী মুক্তিপণ আদায় করেছে। চক্রের মূলহোতা মিল্টন মাসুদের নামে গাজীপুর ও রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মাদক ও অপহরণ মামলা রয়েছে বলে জানায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।


অপহরণের শিকার এক শিশুর বাবা মো. বাহার হোসেন জানান, শিশুটির মায়ের মোবাইলে কথা বলার অভিনয় করে ওই অপহরণকারী। ফলমূল কিনে দেয়ার কথা বলে তাকে নেয়া হয়। এরপর ৩০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। দুইবারে তার স্ত্রী ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন। পরে ওই অপহরণকারী বলেন যে শিশুটিকে ওমুক হোটেলে রেখে এসেছি। আপনি ওখান থেকে নিয়ে যান।
 
অভিভাবকদের উদ্দেশে ডিএমপি উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মোরশেদ আলম বলেন, আপনার শিশুরা যেন অপরিচিত কারও কাছে মোবাইল নম্বর না দেয়, তার বাবার পূর্ব পরিচিত বললেও যেন সেটা বিশ্বাস না করে, সেসব বিষয়ে তাদেরকে সচেতন করে তুলুন।


এডিএস/

আর্কাইভ