প্রকাশিত: এপ্রিল ২৭, ২০২৩, ০১:৫৩ এএম
পটুয়াখালীর দশমিনায় ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে বেড়েছে বিয়ের অনুষ্ঠান। ঈদের ছুটিকে কাজে লাগিয়ে ধুমধাম বিয়ের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে অসহায় মানুষের পকেট কাটছেন নবদম্পতির স্বজনরা। এতে চরম অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন বরিশাল বিভাগের সবচেয়ে দরিদ্রতম এ উপজেলার অসহায় মানুষগুলো।
প্রায় দেড় লাখ জনগোষ্ঠীর অর্ধেকের বেশি দরিদ্র দশমিনা উপজেলার নিম্ন আয়ের মানুষ ঈদের খরচের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই এমন বাড়তি খরচের বিপাকে পড়েছেন। সামাজিক লজ্জাবোধের কারণে ধার-দেনা করে বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজকদের দিতে হয় টাকা। কন্যা দান আর বৌ-ভাতের অনুষ্ঠানে অনেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে (নজর) টাকা দিচ্ছেন।
যদিও বিয়ের অনুষ্ঠান করে টাকা আদায়কে সমর্থন করে না ইসলাম। তবে, সামাজিক প্রচলনের কারণে প্রতিবাদ করেন না কেউ।
অন্যদিকে, বিয়ের মোক্ষম এই সময়কে কেন্দ্র করে কাজীরা টাকা নিচ্ছেন লাগাম ছাড়া। বঞ্চিত করছেন সরকারকে তার প্রাপ্য থেকে। তবে, অভিযোগ মানতে নারাজ কাজীরা।
রফিকুল ইসলাম নামে এক দিনমজুর জানান, গত দুই দিনে বর ও কনে পক্ষ মিলিয়ে তিনি ৩টি বিয়ের দাওয়াতে পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছেন। এর মধ্যে একটি দাওয়াতে উপস্থিত থাকতে পারলেও বাকিগুলোতে তাকে টাকা পাঠিয়ে দিতে হয়েছে। টাকা দিতে না পারলে হয় শুনতে হয় গালাগাল না হয় সমালোচনা। তিনি নিম্ন আয়ের মানুষ হওয়ায় টাকাগুলো সুদে নিয়ে বিয়ে বাড়িতে দিয়েছেন। সামাজিক লজ্জাবোধের কারণে প্রতিবাদ করতে পারেন না বলে জানান তিনি।
প্রায় একই কথা জানিয়েছেন, সত্তার হাওলাদার ও নিজামসহ নিম্ন আয়ের কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা।
বেতাগী-সানকিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান ঝন্টু যুগান্তরকে বলেন, মানুষ এমনিই অর্থনৈতিক সংকটে আছে। এর মধ্যে বিয়ের অনুষ্ঠানের চাপে মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে। অনেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে টাকা দিচ্ছেন। এই প্রচলিত প্রথা থেকে আমাদের বেড়িয়ে আসা উচিত। আমাদের জনপ্রতিনিধিদেরও বাধ্য হয়ে নজরানা দিতে হয়। না গেলে মানুষ বলে ভোট দিয়েছি অথচ আমাদের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেওয়ার পরও আসেন না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাফিসা নাজ নীরা বলেন, এটা সামাজিকভাবে প্রচলিত প্রথা। আইনে এর কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে এটার সমাধান সামাজিকভাবেই করতে হবে। স্থানীয়া বাসিন্দারা এটাকে সমস্যা মনে করলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাই এর সমাধান করতে পারেন চাইলে।
বিএস/