প্রকাশিত: এপ্রিল ২৬, ২০২৩, ০২:৪৬ এএম
২৬ বছর পালিয়ে থাকার পর অবশেষে ধরা পড়লেন নোয়াখালীর চৌমুহনীর ব্যবসায়ী ও হক লাইব্রেরির মালিক ফজলুল হক হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি জামাল উদ্দিন (৫৫)। রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১।
মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে গ্রেপ্তার আসামিকে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এর আগে সোমবার রাত দেড়টার সময় তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আকনগলি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব-১১।
গ্রেফতার জামাল উদ্দিন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের মৃত ছাদু মিয়ার ছেলে।
র্যাব-১১ নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার উপ পরিচালক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাহমুদুল হাসান জানান, ১৯৯৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত জামাল উদ্দিন ও আবুল হাসেমসহ কয়েকজন মিলে চৌমুহনী রেল স্টেশন রোডের হক লাইব্রেরির মালিক বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অবসরপ্রাপ্ত) সামছুল হকের বড় ছেলে ফজলুল হককে মাইক্রো বাসযোগে অপহরণ করে। পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোনো সন্ধান পায়নি। পরে একই বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি ফজলুল হকের বাবা সামছুল বাদী হয়ে সহোদর আবুল হাসেম ও জামাল উদ্দিনকে আসামি করে বেগমগঞ্জ থানায় হত্যা ও অপহরণ মামলা করেন।
মামলার তদন্ত শেষে ডিবি পুলিশ অভিযোগপত্র দাখিল করে জানায়, হত্যাকারীরা নিহতের মরদেহ গুম করেছে।
২০১৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি দীর্ঘ শুনানি শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সহোদর আবুল হাসেম ও জামাল উদ্দিনকে বিশেষ দায়রা জজ আদালতের বিচারক শিরিন কবিতা আক্তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
নিহতের ছোট ভাই ওবায়েদুল হক জুয়েল সিটি নিউজ ঢাকাকে জানান, রায় ঘোষণার সময় আবুল হাসেম উপস্থিত থাকলেও জামাল উদ্দিন ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য আদালত পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিল।
তিনি আরও জানান, উক্ত চাঞ্চল্যকর মামলার রায় ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই আসামি জামাল উদ্দিন নাম পরিচয় গোপন করে আত্মগোপনে চলে যান। র্যাবের সদস্যরা তথ্য-প্রযুক্তি সহায়তায় এবং ছায়া তদন্তের মাধ্যমে আসামির পরিচয় শনাক্ত করে এবং গোয়েন্দা দলের তথ্য সংগ্রহপূর্বক যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি জামাল উদ্দিনকে ২৬ বছর পর গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বেগমগঞ্জ মডেল থানায় তাকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তার বড় ভাইয়ের মরদেহও পর্যন্ত তারা খুঁজে পায়নি। আর সন্তানের শোকে তার মুক্তিযোদ্ধা বাবা অকালে মারা গেছেন।
জেকেএস/