• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ০৭ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

ছেলেকে হাফেজ বানানোর স্বপ্ন পূরণ আর হলো না বাবার

প্রকাশিত: এপ্রিল ১১, ২০২৩, ০৯:৫৫ পিএম

ছেলেকে হাফেজ বানানোর স্বপ্ন পূরণ আর হলো না বাবার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সাঁতার জানত না বলে বাবা-মায়ের অনুমতি নিয়ে বাড়ির পাশের কীর্তিনাশা নদীতে বন্ধুদের সঙ্গে সাঁতার শিখতে যায় আবিদ হাসান (৮)। বন্ধুরা কিছুক্ষণ আবিদকে সাঁতার শিখিয়ে উপরে বসিয়ে রেখে খেলতে চলে যায়। এরপর ফিরে এসে আবিদকে না পেয়ে তারা বাড়ি চলে যায়।

পরে ২৪ ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পর মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে মাদারীপুরের আড়িয়াল খা নদীর তিনডার মুখ এলাকায় আবিদের মরদেহ পাওয়া যায়।

আবিদ হাসান শরীয়তপুর সদর উপজেলার আংগারিয়া দাঁদপুর গ্রামের মফিজুর রহমান শিকদারের ছেলে।

আংগারিয়া ওসমানিয়া কওমি মাদরাসা নূরানী বিভাগের শিক্ষার্থী আবিদ হাসানের বাবা মফিজুর শিকদারের স্বপ্ন ছিল ছেলেকে কোরাআনের হাফেজ বানাবেন। কিন্তু সাঁতার শিখতে পাঠিয়ে ছেলেকে এভাবে হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন তিনি।

মো. নাইম ইসলাম নামে একজন জানান, আবিদ বন্ধুদের সঙ্গে সাঁতার শিখতে কীর্তিনাশা নদীতে গিয়েছিল। কিছুক্ষণ সাঁতার শিখিয়ে বন্ধুরা তাকে নদীর পাড়ে রেখে একটি জাহাজের ঢেউয়ে আনন্দ করতে মাঝ নদীতে চলে যায়। বন্ধুরা উপরে উঠে এসে আবিদকে দেখতে না পেয়ে মনে করেছিল সে বাড়ি চলে গেছে। কিন্তু বাড়িতে তাকে না পেয়ে স্বজন ও বন্ধুরা খোঁজাখুঁজি করেও আর পায়নি। আজ দুপুরে আড়িয়াল খা নদীর তিনডার মুখ এলাকায় আবিদের মরদেহ পাওয়া গেছে।

আবিদ হাসানের বাবা মফিজুর রহমান শিকদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, অনেক স্বপ্ন ছিল ছেলেকে হাফেজ বানাব। কষ্ট করে আবিদরে মাদরাসায় ভর্তি করেছিলাম। অল্প দিনে আবিদ অনেক দূর এগিয়েছিল পড়াশোনায়। আমার সব শেষ হয়ে গেল। আমার আর কিছু রইল না।

আংগারিয়া ওসমানিয়া কওমি মাদরাসার মুহতামিম আবু বকর ঢাকা পোস্টকে বলেন, আবিদ হাসান গতকাল পরীক্ষা দিয়ে বাড়িতে যাওয়ার পর নদীতে সাঁতার শিখতে গিয়ে নিঁখোজ ছিল। আজ তার মরদেহ পাওয়া গেছে। আবিদ শিক্ষার্থী হিসেবে খুবই ভালো ছিল। অল্প দিনে নূরানী বিভাগের সব বিষয় আত্মস্থ করেছিল।

শরীয়তপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ সেলিম মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল দুপুরে খবর পাওয়ার পর শরীয়তপুর ও মাদারীপুর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যৌথভাবে নদীতে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করেও আবিদ হাসানের কোনো খোঁজ পায়নি। উদ্ধারের সময় মাদারীপুরের ডুবুরি দলও ছিল। শুনেছি আজ দুপুরে আড়িয়াল খাঁ নদীতে আবিদের মরদেহ পাওয়া গেছে।

পালং মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা এ বিষয়ে কিছুই জানি না। ঘটনাটি দুঃখজনক।

দেশজুড়ে সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ