• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিক্ষকের স্ত্রী পেলেন ভিজিডি কার্ড!

প্রকাশিত: এপ্রিল ৭, ২০২৩, ১২:২৬ এএম

শিক্ষকের স্ত্রী পেলেন ভিজিডি কার্ড!

বরগুনা প্রতিনিধি

বরগুনার তালতলী উপজেলার মেনিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহনেওয়াজ সেলিমের স্ত্রী সালমা বেগমের নামে দুস্থদের ভিজিডি কার্ড রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সচ্ছল এই পরিবার প্রতি মাসে ভিজিডির ৩০ কেজি করে চাল তুলে নিচ্ছেন। আর এতে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত অসহায় ও দুস্থরা।

হতদরিদ্র-দুস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি ভিজিডি কার্ড বিতরণে এমন অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে বড়বগী ইউনিয়নে।

জানা গেছে, উপজেলার বড়বগী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শাহ নেওয়াজ সেলিম। তিনি মেনিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার স্ত্রী সালমা বেগমের নামে ২০২৩-২৪  অর্থবছরে ভিজিডি কার্ড হয়েছে। তিনি এই ভিজিডির চালও তুলে নিয়েছেন।

এ বিষয়ে তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে তালুকদারপাড়া গ্রামের হতদরিদ্র সোলায়মানের স্ত্রী খাদিজা বেগম অভিযোগ করছেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, তার পরিবার হতদরিদ্র-দুস্থ। তার তিনটি সন্তান ও আয়-রোজগার করার কোনো মাধ্যম নেই। তার নামে ভিজিডি নেই। তবে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি চাকরিজীবীরা ভিজিডি কার্ড পেয়েছেন।

মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদের চূড়ান্ত তালিকায় ৩ নম্বর ওয়ার্ডের তালুকদারপাড়া গ্রামে ৪২ নম্বর সিরিয়ালে ভিজিডির কার্ডধারী সালমা বেগমের নামে একটি ভিজিডি কার্ড রয়েছে। তার নামে ২০২৩-২৪ সালের মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে ইস্যুকৃত কার্ডে ভিজিডির চাল পাচ্ছেন তিনি। সালমা বেগমের পরিবার বেশ সচ্ছল। স্বামী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।

সালমা বেগমের স্বামী শাহ নেওয়াজ সেলিম বলেন, আমি সরকারি চাকরিজীবী এটা সঠিক। আমার স্ত্রীর নামে ভিজিডি কার্ড আছে এটাও সঠিক। আমাদের ভিজিডি তালিকায় নাম দিয়েছেন চেয়ারম্যান।

বড়বগী ইউনিয়ন পরিষদ সচিব এমরান হোসাইন বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ওই কার্ড বাতিলের জন্য রেজুলেশন করে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে বড়বগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন (আলম মুন্সী) বলেন, এই ভিজিডি নামের তালিকা উপজেলা চেয়ারম্যান দিয়েছেন। আপনারা তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

তালতলী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রূপ কুমার পাল বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়া অভিযোগ পাওয়ার পরে ওই শিক্ষকের স্ত্রীর নামের ভিজিডির কার্ডটি বাতিল করার প্রক্রিয়া চলছে। কার্ডটি বাতিল করে নতুন কারো নামে কার্ড তৈরি করা হবে।

তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা ভিজিডি কমিটির সভাপতি সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, এ কার্ডসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ এসেছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে তদন্ত করার জন্য বলা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট আসার পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো স্বজনপ্রীতি হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা চেয়ারম্যান রেজবি উল কবির জোমাদ্দার বলেন, ভিজিডি কার্ডের নামের তালিকা দেওয়ার সময় ভোটার আইডি কার্ড অনুযায়ী সুপারিশ করা হয়েছে। ভোটার আইডি কার্ডে স্বামীর নাম থাকে না। এজন্য এই ভুলগুলো হয়।

তিনি আরও বলেন, পরিচয় গোপন করে এমন কিছু হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আর্কাইভ