• ঢাকা শনিবার
    ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ছাত্রীদের দিয়ে উকুন পরিষ্কার করান শিক্ষিকারা!

প্রকাশিত: এপ্রিল ৪, ২০২৩, ০১:৪৪ এএম

ছাত্রীদের দিয়ে উকুন পরিষ্কার করান শিক্ষিকারা!

ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

ক্লাস চলাকালীন কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শাক তুলতে বাধ্য করা, মাথার উকুন পরিষ্কার করা, টয়লেট ও স্কুল আঙিনা পরিষ্কারসহ নানান কাজ করতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে পটুয়াখালীর গলাচিপার ৭৭ নম্বর মধ্য ডাকুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ পেয়ে রোববার (২ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে সরেজমিন দেখা যায়, জান্নাতুল ও রাবেয়াসহ তিন শিক্ষার্থীকে দিয়ে কড়া রোদের মধ্যে শাক তুলতে পাঠিয়েছেন স্কুল শিক্ষক প্রিয়াঙ্কা, শম্পা ও মাধবী। ওই তিন শিক্ষার্থী মাঠে দিনভর শাক তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়ায় ওইদিন তারা কোনো ক্লাসে অংশগ্রহণ করেনি।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বলছে, মাঝেমধ্যে তাদের দিয়ে শাক তুলে তিন শিক্ষক ভাগ করে বাড়িতে নিয়ে যান। আগের মতো সোমবারও কড়া রোদের মধ্যে শাক তুলতে বললে তারা অপারগতা প্রকাশ করলে শিক্ষকরা খেপে যান। সে জন্য ক্লাস বাদ দিয়ে তারা তিনজনে শাক তুলছে।

অভিযোগ রয়েছে, ওই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে আয়ার কাজ পর্যন্ত করিয়ে থাকেন। তাদের দিয়ে ঘর ঝাড়ু দেয়া, টয়লেট পরিষ্কার করা, স্কুল মাঠের আঙিনা পরিষ্কারসহ নানান কাজ করানো হয়। এমনকি স্কুল চলাকালীন শিক্ষকরা ফোনে চ্যাটিংয়ে ব্যস্ত থাকেন আর ছাত্রীদের দিয়ে মাথার উকুন পরিষ্কার করিয়ে নেন।

এ বিষয়ে ডাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা ইউপি সদস্য গাজী সালমা বেগম বলেন, ‘আমার কাছে স্কুলের ছেলেমেয়েদের অভিভাবকরা অনেকবার অভিযোগ দিয়েছেন। স্কুলের শিক্ষিকাদের বারবার অবহিত করলেও তারা আমার কথার তেমন একটা গুরুত্ব দেননি। ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে এ রকমের পৈশাচিক নির্যাতনমূলক কাজগুলো প্রায়ই করিয়ে থাকেন।’

স্কুলসংলগ্ন বাসিন্দা জাহিদ সময় সংবাদকে বলেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক খুবই ভালো মানুষ। তবে অন্য যেসব শিক্ষিকা রয়েছেন, তারা সবসময় ক্লাসে এসে মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকেন এবং বাচ্চাদের দিয়ে বিভিন্ন কাজকর্ম করিয়ে থাকেন। এমনকি শাক তোলার কাজ তো হরহামেশা করিয়ে থাকেন।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মো. রুহুল আমিন মোবাইল ফোনে সিটি নিউজ ঢাকাকে বলেন, ‘আমার চাকরির বয়স আর মাত্র এক বছর বাকি আছে। আমি এক বছর পর অবসরে যাব। গত পাঁচ দিন ট্রেনিংয়ে থাকায় আমার অনুপস্থিতিতে যে কাজটি হয়েছে এটা একেবারেই দুঃখজনক এবং ন্যক্কারজনক ঘটনা। আমি অত্যন্ত দুঃখিত। বিষয়টি আমি তদন্ত করে দেখব।’

এ বিষয়ে গলাচিপা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মীর রেজাউল রহমান বলেন, ‘সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছি। তিনি স্কুলে গিয়ে শিক্ষিকাদের জবাব গ্রহণ করবেন। জবাবের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

 

আর্কাইভ