• ঢাকা শনিবার
    ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট গ্রাহকের ২০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও

প্রকাশিত: মার্চ ১৬, ২০২৩, ০১:০২ এএম

ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট গ্রাহকের ২০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও

ছবি: সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলায় ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং উদ্যোক্তা মো. আলমগীর গ্রাহকের প্রায় ২০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ১২ মার্চ থেকে উপজেলার বোর্ড বাজারের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের শাখাটি তালাবদ্ধ আছে। খোঁজ মিলছে না এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবস্থাপক ও অংশীদারদের।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক দশক ধরে হুগলাকান্দি গ্রামের মৃত সিরাজ উদ্দিন ব্যাপারীর ছেলে আলমগীর তার অংশীদার বীর কাটিহারি গ্রামের কেনু মিয়ার ছেলে মানিক মিয়াকে নিয়ে বোর্ড বাজারে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং করছেন। ব্যবস্থাপক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় হুগলাকান্দি গ্রামের রিটন মিয়াকে। বর্তমানে তারা সবাই গা ঢাকা দিয়েছেন।

ভালো আচরণের মাধ্যমে গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করেন আলমগীর। একপর্যায়ে স্থায়ী আমানত বা ডিপিএস প্রতি এক লাখ টাকা জমার বিপরীতে মাসে এক হাজার টাকা সুদ দেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। এতে গ্রামবাসীরা ডিপিএসে আগ্রহী হোন। এসব ডিপিএস রাখার সময় আলমগীর তাদের চেক দেন।

ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এ এজেন্ট শাখায় চর হাজীপুর গ্রামের সৌদি প্রবাসী রতন মিয়ার স্ত্রী রোজিনা আক্তার স্বামীর পাঠানো ২৭ লাখ টাকা রেখেছিলেন। হুগলাকান্দি গ্রামের আব্দুল মোতালিব রেখেছিলেন সাড়ে ১৫ লাখ টাকা এবং একই গ্রামের আবুল কাসেম রেখেছিলেন ১৪ লাখ টাকা। গত তিনদিন যাবত তারা বোর্ড বাজারে এজেন্ট ব্যাংকিং শাখায় চেক নিয়ে গেলে কারো দেখা পাচ্ছেন না, মোবাইল নম্বরও বন্ধ।

ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জানান, এখানকার অনেকের স্বজনই প্রবাসী। তাদের পাঠানো টাকা তারা এজেন্ট ব্যাংকিং শাখায় জমা করেছিলেন ডিপিএস হিসেবে। সেই টাকার ওপর প্রতি লাখে ১ হাজার টাকা সুদও পাচ্ছিলেন। কিন্তু রোববার থেকে শাখাটি তালাবদ্ধ করে এজেন্ট উধাও হয়ে গেছেন।

হোসেনপুরসহ আশপাশের প্রায় ৪০০ গ্রাহকের ২০ কোটিরও বেশি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যাওয়া এজেন্ট আলমগীর ও তার সহযোগীদের দ্রুত সন্ধান বের করে টাকা ফেরত দেয়ার দাবি জানিয়েছেন হুগলাকান্দি গ্রামের আজিজুল ইসলাম মৃধা।

ডাচ্-বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের এরিয়া ম্যানেজার রোকন উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি সিটি নিউজ ঢাকাকে বলেন, গত ‘সোমবার থেকে বোর্ড বাজারের এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ আছে। এজেন্ট আলমগীর তার ব্যক্তিগত নথিপত্র দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন।’

রোকন উদ্দিন আরও বলেন, গ্রাহকরা স্থায়ী আমানত বা ডিপিএস অ্যাকাউন্টে টাকা রেখেছেন। টাকা ব্যাংক থেকে তুলার জন্য এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের অনুমোদন দরকার হয়। কিন্তু আলমগীর তার অংশীদার ও এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবস্থাপকসহ উধাও হয়ে যাওয়ায় গ্রাহকরা চেক হাতে ঘুরলেও টাকা তুলতে পারছেন না।

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রাহকদের অভিযোগ পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জাগো নিউজকে বলেন, অভিযোগ শুনেছি। খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আর্কাইভ